স্যামসাংয়ের ত্রৈমাসিক মুনাফা আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে। আর এর মূল কারণ- লোকজন আর আগের মতো মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপ কিনছেন না।
কোরিয়ান এই প্রযুক্তি জায়ান্ট মঙ্গলবার ডিসেম্বরে শেষ হওয়া প্রান্তিকে ৪.৩ ট্রিলিয়ন কোরিয়ান ওন বা সাড়ে তিনশ কোটি ডলার পরিচালন মুনাফা করেছে, যা আগের বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৬৯ শতাংশ কম। এক বিবৃতিতে স্যামসাং বলছে, রাজস্ব আয় ৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৭০ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ওন বা পাঁচ হাজার সাতশ ৩০ কোটি ডলারে।
২০১৪ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের পর এটি কোম্পানির সবচেয়ে দুর্বল প্রান্তিক মুনাফা বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে সিএনএন। ওই বছর স্যামসাংয়ের স্মার্টফোন ব্যবসা প্রতিযোগী কোম্পানিগুলোর কাছে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছিল।
“বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে দুর্বল চাহিদার কারণে চতুর্থ প্রান্তিকে ব্যবসায়িক পরিবেশের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি”র কথা উঠে এসেছে স্যামসাংয়ের সর্বশেষ বিবৃতিতে।
তবে, এই হতাশাজনক ফলাফলের ধারণা আগে থেকেই ছিল। এই মাসের শুরুতেই স্যামসাং প্রাক-উপার্জন পূর্বাভাসে দুর্বল ফলাফলের ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিল। সেখানে কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা বলেছিলেন মেমরি চিপের মূল্য হ্রাস এবং ডিভাইসে ভোক্তাদের কম অর্ডারের কথা।
বিনিয়োগকারীদের কাছে দেওয়া প্রেজেন্টেশনেও এই শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স নির্মাতা ‘মোবাইল এবং পিসির দুর্বল চাহিদা’র কথা বলেছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মেমরি চিপ ব্যবসাও। “গভীর অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে ক্রেতারা পুরোনো গ্যাজেট ব্যবহারই চালিয়ে যাচ্ছেন।”
বৈশ্বিক এই অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে এই ধারা আগামী মাসগুলোতেও অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা প্রকাশ করেছে স্যামসাং। পাশাপাশি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে সামগ্রিক চাহিদা ফের বাড়তে শুরু করবে বলে পূর্বাভাসও রয়েছে এতে।
“প্রধান অঞ্চলগুলোয় অর্থনৈতিক মন্দার কারণে স্মার্টফোনের চাহিদা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এই ত্রৈমাসিকে ফের হ্রাস পেতে পারে।”মঙ্গলবার সিউলে স্যামসাংয়ের শেয়ারের দাম কমেছে ৩ শতাংশ।
তবে, কিছু ভালো খবরও দিয়েছে স্যামসাং। ২০২২ সালের পুরো বছরে এই জায়ান্ট ৩০২.২ ট্রিলিয়ন ওন বা ২৪ হাজার ৫৭০ কোটি ডলার আয় করেছে, যা ২০২১ সালে ২৭৯.৬ ট্রিলিয়ন ওন বা ২২ হাজার ৭৪০ কোটি ডলারের চেয়ে বেশি এবং সর্বোচ্চ রেকর্ড।তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, মেমোরি চিপের দাম ক্রমাগত কমে যাওয়ায় চলতি প্রান্তিকে প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা ফের কমবে বলে তারা ধারণা করছেন।