চীনা সরকারি কর্মীদের আইফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এমন খবরের পর টানা দ্বিতীয় দিনের মতো অ্যাপলের শেয়ারের দাম কমেছে।
সিএনএন এর রিপোর্টে বলা হয়েছে।শেয়ারবাজারে অ্যাপলের মূল্যায়ন গত ২ দিনে ৬ শতাংশ বা প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার কমেছে।
এই প্রযুক্তি জায়ান্টের তৃতীয় বৃহত্তম বাজার চীন। গত বছর মোট মুনাফার ১৮ শতাংশ দেশটি থেকে এসেছে। অ্যাপলের বৃহত্তম সরবরাহকারী ফক্সকন চীনেই তাদের বেশিরভাগ পণ্য উৎপাদন করে।
বুধবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়, বেইজিং কেন্দ্রীয় সরকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের অফিসে আইফোন আনার ক্ষেত্রে বা কাজে ব্যবহার না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরের দিন, ব্লুমবার্গ নিউজ জানায় যে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি এবং সরকার-সমর্থিত সংস্থার কর্মীদের উপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানান, সাম্প্রতিক সময়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আইফোন ব্যবহার না করার নির্দেশনা দিয়েছেন। অন্যান্য বিদেশী-ব্র্যান্ডের ডিভাইসগুলিতেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ইতোমধ্যে কিছু সংস্থায় আইফোন নিষিদ্ধ ছিল। তবে সূত্রমতে, নিষেধাজ্ঞার ব্যাপ্তি বাড়ানো হচ্ছে।
সেই নির্দেশগুলি কতটা ব্যাপকভাবে প্রচার করা হয়েছে এখনো স্পষ্ট হয়নি। তবে আইফোন ১৫ বাজারে আসার আগে এমন খবরে অ্যাপলের শেয়ারের দরপতন হচ্ছে। ১২ তারিখ আইফোনের সর্বশেষ সংস্করণ বাজারে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানির জন্য কাজ করা কয়েকজন সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছেন, তাদেরকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে অ্যাপল ডিভাইস বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
চীন হল অ্যাপলের অন্যতম বড় বাজার এবং দেশটিতেই আইফোন তৈরি করা হয়, যদিও সম্প্রতি অ্যাপল ভারতে উৎপাদন বাড়িয়েছে।
প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় চীন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। অ্যাপল তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের জন্য বিবিসির অনুরোধের জবাব দেয়নি।
শেয়ারবাজারে বিশ্বে সর্বোচ্চ মূল্যমান অ্যাপলের, প্রায় ২.৮ ট্রিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। অ্যাপলের শেয়ারের পতনের পাশাপাশি এর কিছু সরবরাহকারীর শেয়ারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্বের বৃহত্তম স্মার্টফোন চিপ সরবরাহকারী কোয়ালকমের শেয়ার বৃহস্পতিবার ৭ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার এসকে হাইনিক্সের শেয়ার শুক্রবার প্রায় ৪ শতাংশ কমেছে।
প্রযুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে, উভয় পক্ষই বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
এই বছর ওয়াশিংটন তার মিত্র জাপান এবং নেদারল্যান্ডস মিলে কিছু চিপ প্রযুক্তিতে চীনের অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করে। চীন সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের দুটি উপাদানের রপ্তানি সীমাবদ্ধ করে প্রতিশোধ নিয়েছে।
বেইজিং তার চিপ তৈরির শিল্পকে উৎসাহিত করার জন্য ৪০ বিলিয়ন ডলারের নতুন বিনিয়োগ তহবিলও প্রস্তুত করছে বলে জানা গেছে।