ঢাকা | শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ |
৩৬ °সে
|
বাংলা কনভার্টার
walton

সিলেটে ডিবিএল গ্রুপের ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্কের যাত্রা শুরু

সিলেটে ডিবিএল গ্রুপের ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্কের যাত্রা শুরু
সিলেটে ডিবিএল গ্রুপের ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্কের যাত্রা শুরু

সিলেটের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে আনুষ্ঠানিকভাবে ডিবিএল ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্ক-এর যাত্রা শুরু হয়েছে। দশটি ইউনিটের মাধ্যমে ডিবিএল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক ৬৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পাশাপাশি প্রায় ছয় হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করবে বলে জানা গেছে।

গত রবিবার (২২ আগস্ট) রাজধানী সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এই ইন্ডাষ্ট্রিয়াল পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এসময় তিনি বলেন, একশ’টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্মাণ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি স্বপ্ন। এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিপ্লব আরো গতিশীল হবে। তিনি আরও বলেন বাংলাদেশের শিল্পের ধারবাহিক বিকাশে সরকার সব ধরনের অবকাঠামোগত ও নীতি সহায়তা করতে প্রস্তুত এবং তা করতে যথেষ্ট আগ্রহী। ডিবিএল গ্রুপের এই বিনিয়োগ দেশীয় শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)র নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে দেশ এখন অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে সমৃদ্ধির পথে। উন্নয়নের তাক লাগানো সব চমকে বাংলাদেশ এখন গোটা বিশ্বের কাছে অনন্য দৃষ্টান্ত। শিল্প-বাণিজ্যসহ সব খাতের ক্রমবর্ধমান বিকাশে দুরন্ত গতিতে ছুটে চলেছে দেশের অর্থনীতি। দেশে শিল্প-বাণিজ্যের অবদান বাড়ছে, এই খাতের বিকাশ ঘটেছে বহুগুণ। বেজা সেই বিকাশকে আরও বেশি বেগবান করতে উদ্যোগী ভূমিকা পালন করেছ। দেশব্যাপী ১০০ টি অর্থণৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সে অভিষ্ট লক্ষ্যেই এগুচ্ছে। ডিবিএল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক এই বিকাশমান ধারার আরেকটি ধাপ। এই অর্থনৈতিক অঞ্চল গুলোতে ২০৩০ সালের মধ্যে ১ কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে সরকার।

ডিবিএল গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর, এম. এ. জাব্বাব বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি রোল মডেল হিসেবে মাথা তুলে দাড়িয়েছে। এর পিছনে রয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার এবং সঠিক জায়গায় বিশাল বিনিয়োগ। ডিবিএল গ্রুপের লক্ষ্য এই উন্নয়নের জোয়ারে অংশ নিয়ে বাংলাদেশকে শিল্প বিপ্লবের দিকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে। সেই লক্ষ্যেই ডিবিএল গ্রুপ ডিবিএল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের যাত্রা শুরু করেছে।

তিনি আরো বলেন, ডিবিএল গ্রুপ সব সময়ই প্রথাগত ব্যবস্যার পদ্ধতিতে থেমে না থেকে বহুমাত্রিক, প্রযুক্তি নির্ভর, অটোমেটেড প্লাটফর্মের জায়গা গুলোতেও বিনিয়োগ করেছে। ডিবিএল ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক আমাদের দীর্ঘ পথযাত্রায় আরো ভূমিকা রাখবে।

সিলেটের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কতৃপক্ষ বা বেজা। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের ১৬৭.৬ একর জায়গা বরাদ্ধ পেয়ে এক বিশাল শিল্পপার্ক প্রতিষ্ঠা করছে ডিবিএল গ্রুপ। ডিবিএল অর্থনৈতিক অঞ্চলে থাকছে টেক্সটাইল ও সিরামিক শিল্পসহ অন্যান্য শিল্পে মোট ১০টি ইউনিট। ইউনিটগুলো হলো জিনাত টেক্সটাইল মিলস্ লি, স্পিনিং ইউনিট, রিসাইকেল পলিএস্টার ইউনিট, সিরামিক টাইলস ইউনিট, স্যানিটারি ওয়ার ইউনিট, সিরামিক ফ্রিট ইউনিট, ফ্লোট গ্লাস ইউনিট, গ্লাস প্রসেসিং ইউনিট, ড্রাই মর্টার ইউনিট, ফসেট ইউনিট। এই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কটি থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার বার্ষিক টার্নওভার লাভের আশা করা হচ্ছে ।

ডিবিএল ৪৩.৫ টন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি বিশ্বমানের টেক্সটাইল মিল নির্মানের পরিকল্পনা করছে যেখানে টেক্সটাইল শিল্পের বিভিন্ন চাহিদা পূরনের জন্য প্রতিদিন ৩৫ টন সূক্ষ্ম, তুলা সুতা ও ৮.৫ টন রটার সুতা উৎপাদন করা হবে, উৎপাদন ব্যবস্থাকে দ্বিগুণ করার জন্য এই মিলটিকে ভবিষ্যতে সম্প্রসারিত করা হবে । এই ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কটিতে ১৮ টন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি রিসাইকেল পলিয়েস্টার ইউনিটও থাকছে যা অন্যান্য স্পিনিং মিলের জন্য কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত স্টেপল ফাইবার তৈরি করবে।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কটিতে আরও থাকছে একটি সুবিশাল সিরামিক ফ্যাক্টরি যা দুইটি ভিন্ন উৎপাদন ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতিদিন ৪০,০০০ বর্গমিটার আয়তনের ফ্লোর ও দেয়ালের টাইলস তৈরি করবে। এছাড়াও সিরামিক কারখানা গুলোতে সিরামিক গ্লেজ প্রস্তুত করার বিশেষ উপাদান সিরামিক ফ্রিট তৈরির জন্য ৯৯ টন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি কারখানা থাকছে । যা সিরামিক শিল্প কারখানা গুলোতে বহুল ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ন পার্কের সাথে সংশ্লিষ্ট, ডিবিএল এর সবচেয়ে বড় প্রকল্প গুলোর মধ্যে অন্যতম তাদের সুবিশাল টেক্সটাইল মিলটিতে থাকছে দুইটি স্পিনিং ফ্যাক্টরি। ভার্টিকালভাবে সমন্বিত এই দুইটি টেক্সটাইল মিলের মাধ্যমে উৎপাদিত পন্য পৌঁছে যাবে এইচ এন্ড এম, জর্জ, পুমা, ইস্পিরিট, জি-স্টার, ডেকাথলন, টম টেইলরের মত বিশ্ববিখ্যাত সব নামি দামি ব্র্যান্ডের কাছে ।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ আখতার হোসেন, ডিবিএল গ্রুপের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহেদ, ভাইস চেয়ারম্যান এম. এ. রহিম, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম. এ. কাদেরসহ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এর উর্দ্ধতণ কর্মকর্তাগণ, ডিবিএল গ্রুপ-এর বিভিন্ন ইউনিটের উর্দ্ধতণ কর্মকর্তাগণসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

ডিবিএল গ্রুপ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Transcend
Vention