ইভ্যালি পরিচালনার জন্য গঠিত বোর্ড সদস্যদের সম্মানী নির্ধারণ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বোর্ডের চেয়ারম্যান আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক প্রতি বোর্ড মিটিংয়ে ২৫ হাজার টাকা সম্মানী পাবেন এবং প্রতি বার্ষিক সাধারণ সভায় ২ লাখ টাকা পাবেন।
বোর্ডের তিন সদস্য সাবেক সচিব মো. রেজাউল আহসান, আইনজীবী ব্যারিস্টার খান মো. শামীম আজিজ ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ প্রতি বোর্ড মিটিংয়ে ১০ হাজার টাকা সম্মানী পাবেন। প্রতি বার্ষিক সাধারণ সভায় বোর্ডের এ তিন সদস্য এক লাখ টাকা করে সম্মানী পাবেন।
বোর্ডের অপর সদস্য ওসএসডিতে থাকা অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুব কবীর সরকারের কাছ থেকে বেতন নেবেন। তবে তিনি যখন অবসরে যাবেন তখন থেকে তার সর্বশেষ বেতনের আনুপাতিক ইভ্যালি থেকে বেতন পাবেন।
ইভ্যালি পরিচালনার জন্য বোর্ড গঠন সংক্রান্ত লিখিত আদেশে এ সম্মানী নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ ১০ পৃষ্ঠার লিখিত আদেশ প্রকাশ করেন।
লিখিত আদেশে বলা হয়েছে, ইভ্যালির গ্রাহকরা আগামী ছয় মাস তাদের পাওনা আদায়ের জন্য বোর্ডকে চাপ দিতে পারবেন না। তবে কোনো গ্রাহক চাইলে পাওনার কথা বোর্ডের কাছে বা আদালতে জানাতে পারবেন।
১৮ অক্টোবর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের বোর্ড গঠন করে দেন হাইকোর্ট।
বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, ওএসডিতে থাকা আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ, কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনায় গঠিত বোর্ড কী ধরনের কাজ করবে- সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, লিখিত আদেশ পাওয়ার পরপরই তারা বোর্ড মিটিংয়ে বসবেন। কোথায় কী আছে, সবকিছু বুঝে নেবেন। কোম্পানি যেভাবে চলে, সেভাবে প্রথমে বোর্ড মিটিং বসবে। তাদের (বোর্ড) দায়িত্ব হলো টাকাগুলো কোথায় আছে, কোথায় দায় আছে, তা দেখা।
অডিট লাগবে, বোর্ড অন্য কাজগুলোও দেখবে। এরপর সবকিছু করার পর বোর্ড যদি দেখে কোম্পানিটি চলার যোগ্যতা নেই, তখন অবসায়নের জন্য প্রসিড (প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া) করবে। কোম্পানির অবসায়ন চেয়ে আবেদনকারী আবেদন করেছেন। তখন আবেদনকারীর সঙ্গে বোর্ডও বলবে, কোম্পানিটি অবসায়ন করতে হবে। আর যদি বলে চালানো সম্ভব, তাহলে কোম্পানিটি চলবে।
জানতে চাইলে রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার এ এম মাসুম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বোর্ড শুরুতেই ইভ্যালির অবস্থা সম্পর্কে অডিট করবে। তাদের কাছে দায়-দেনার পরিমাণ হিসাব, কত অর্থ তাদের কাছে ভোক্তাদের পাওনা, তাদের কত সম্পদ আছে এই পুরো বিষয়টা অর্থাৎ কোম্পানিটি কী অবস্থায় আছে সেটার একটা খতিয়ান করতে হবে। এজন্য শুরুতেই অডিট করবেন তারা।
তিনি বলেন, কোম্পানিটির যে দেনা রয়েছে, তা কীভাবে পরিশোধ করা যাবে, কোম্পানিটি আদৌ আর পরিচালনা করা সম্ভব, নাকি বন্ধ ঘোষণা করা উচিত, এসব বিষয়ে অডিটের পর বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে। যদি কোম্পানিটি পরিচালনা করা সম্ভব হয়, তাহলে বোর্ড সেটি পরিচালনা করবে। পরিচালনা করা সম্ভব না হলে কোম্পানিটি অবসায়ন করে দেওয়া হবে। কোম্পানির নিয়মিত যেসব কাজ সেটি এ বোর্ড পরিচালনা করবে, এমনকি বাৎসরিক সভাও। ব্যারিস্টার মাসুম আরও বলেন, যেহেতু ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং চেয়ারম্যান কারাগারে রয়েছেন তাই এ কোম্পানি পরিচালনা করতে যা যা করতে হয় তার সবই করবে এ বোর্ড। এক মাস পর আগামী ২৩ নভেম্বর সার্বিক বিষয়ে এ বোর্ড আদালতে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করবে।