ইভ্যালি, আলেশা মার্ট, ই-অরেঞ্জ,দালাল প্লাস,প্রাইমবাজার,ধামাকাশপিং এর মতো ই–কমার্স সাইটগুলো কীভাবে চলবে, তা চূড়ান্ত করতে শিগগিরই হচ্ছে ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা। এ লক্ষ্যে আগামীকাল বুধবার বেলা ১১টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে একটি আন্তমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমবারের মতো আইন মন্ত্রণালয় থাকছে এতে।
বাণিজ্য মন্ত্রণায়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মহাপরিচালক, ডব্লিউটিও সেল) হাফিজুর রহমান আজ মঙ্গলবার জানান, ‘কাল স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে বৈঠক। প্রথমবারের মতো আইন মন্ত্রণালয় থাকছে এতে, ভেটিংয়ের দরকার আছে কি না, বোঝার জন্য। না থাকলে খুব শিগগির জারি করা হবে।’
ডিজিটাল কমার্স বা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সেবার অসুবিধার দিকগুলো বিবেচনায় নিয়ে ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা-২০২১ প্রণয়ন করা হচ্ছে। জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা, ২০২০ (সংশোধিত)-এর আওতায় নির্দেশিকাটি তৈরি করা হচ্ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ই-কমার্স সেল ইতিমধ্যে নির্দেশিকার একটি খসড়া তৈরি করেছে। ই-কমার্স সেলে বর্তমানে এক হাজার প্রতিষ্ঠানের নাম-ঠিকানা রয়েছে।
এটি প্রণীত হলে দেশে যেনতেনভাবে আর ডিজিটাল কমার্স বা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান চালানো যাবে না। পণ্য বা সেবা কেনাবেচা, ফেরত ও পরিবর্তনের শর্ত প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে বা মার্কেটপ্লেসে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। পণ্য ও সেবা বিক্রি বা প্রসারের জন্য কোনো ধরনের লটারি বা লটারিজাতীয় কোনো ব্যবস্থাও নিতে পারবে না কোনো প্রতিষ্ঠান। কোন পণ্যের স্টক কত, তা-ও জানাতে হবে গ্রাহকদের।
ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
এ নির্দেশিকার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো ডিজিটাল কমার্স পরিচালনায় স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা। প্রতিযোগিতামূলক বাজারব্যবস্থা গড়ে তোল মাধ্যমে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা ও ডিজিটাল ব্যবসায়ের প্রসারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। এ ছাড়া ডিজিটাল ব্যবসায় শৃঙ্খলা এনে ভোক্তার আস্থা বৃদ্ধি করাও এর লক্ষ্য। ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকার সাধারণ নিয়মাবলি:
নির্দেশিকায় যা যা থাকছে
এটি চূড়ান্ত হলে ওয়েবসাইট, মার্কেটপ্লেস বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পণ্য ও সেবা ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য উপস্থাপনের ক্ষেত্রে পণ্যের যাবতীয় বিষয় ও শর্তাবলি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। যেমন পণ্যমূল্য ফেরতের শর্তাবলি, তার কোনো পরিবর্তন, সরবরাহের সময়সীমা সবকিছু।
ডিজিটাল কমার্সের মাধ্যমে মাল্টি লেভেল মার্কেটিং বা নেটওয়ার্ক ব্যবসা পরিচালনা করা যাবে না।ডিজিটাল মাধ্যমে নেশাসামগ্রী, বিস্ফোরক দ্রব্য বা অন্য কোনো নিষিদ্ধ সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে না। ডিজিটাল মাধ্যমে ওষুধ ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে।
ক্রয়-বিক্রয়ের সময় কোনো ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করার প্রয়োজন হলে আগেই ক্রেতার অনুমতি নিতে হবে।
সব ধরনের ডিজিটাল ওয়ালেট, গিফট কার্ড, ক্যাশ ভাউচার বা অন্য কোনো মাধ্যম, যা অর্থের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হবে, সেই সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিয়ে করতে হবে।
ডিজিটাল মাধ্যমে কোনো ধরনের অর্থ ব্যবসা পরিচালনা করার ক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নিতে হবে।
ক্রেতাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো পণ্য কেনার জন্য বাধ্য করা যাবে না। সব ডিজিটাল কমার্স ব্যবসায়ীকে ট্রেড লাইসেন্স/ভ্যাট নিবন্ধন/টিআইএন/ইউবিআইডি/পিআরএ নিতে হবে।