প্রায় ১১৬ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ এনে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ধামাকার বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।
বৃহস্পতিবার সিআইডির পক্ষ থেকে সহকারী পুলিশ সুপার আল আমিন বাদী হয়ে বনানী থানায় মুদ্রা পাচার আইনে মামলাটি করেন।
বনানী থানার ওসি নূরে আজম মিয়া বলেন, “ধামাকার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জসীম উদ্দিন চিশতীসহ ছয়জন এবং তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলাটি করা হয়েছে।"
ধামাকার মালিকানা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোট্রেড গ্রুপ, সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম লিমিটেড এবং ইনভেরিয়েন্ট টেকনোলজি লিমিটেড- এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বাকি আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- জসীম উদ্দিনের স্ত্রী ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইদা রোকসানা খানম, জসীম উদ্দিনের ছেলে একই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান তাশফির রেদোয়ান চিশতী, প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিমউদ্দীন আসিফ, পরিচালক মাশফিক রেদোয়ান চিশতী ও পরিচালক সাফওয়ান আহমেদ।
সিআইডির মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান বলেন, “ধামাকার ব্যাংক একাউন্ট থেকে প্রায় ১১৬ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং হয়েছে।”
সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলেন, “ধামাকার ব্যবসায়িক কার্যক্রমের উপর তদন্ত করে এই আর্থিক কেলেঙ্কারির সন্ধান পাওয়া গেছে।”
ধামাকাশপিং ডটকমের চিফ অপারেটিং অফিসার সিরাজুল ইসলাম রানাকে ফোন করা হলে তিনি তা কেটে দেন।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে অনলাইনে কেনাকাটা বাড়ার মধ্যে বেশ কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগ তুলেছে গ্রাহকরা।
গত বছরের নভেম্বর মাসে যাত্রা শুরুর পর ধামাকা গাড়ি, বাইকসহ বিভিন্ন পণ্যে ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়ের ঘোষণা দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম হিসেবে মোটা অঙ্কের টাকা তুলে নেয়। মার্সিডিজ বেঞ্জসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গাড়িতে ৩৫ শতাংশ ছাড়ের অফারও দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি।
এসপি হুমায়ুন কবির বলেন, “ধামাকা তাদের হাজার হাজার গ্রাহককে 'ডাবল টাকা ভাউচার', 'সিগনেচার কার্ডস' এবং মোটা অঙ্কের ছাড়ের মতো আকর্ষণীয় সব অফারের মাধ্যমে প্রতারিত করে আসছে।”
অনলাইন মার্কেট প্লেস ইভ্যালির বিরুদ্ধে গ্রাহকদের নানা অভিযোগের পর ১৪টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নিয়ে নিজ উদ্যোগে তদন্ত শুরু করে সিআইডি।
প্রাথমিক তদন্তে ধামাকাসহ অন্তত পাঁচটি প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম পাওয়া গেছে বলে জানান সিআইডি কর্মকর্তারা। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়েও তদন্ত চলছে বলে তারা জানান।