কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হুট করে গ্যাসের প্রিপেইড মিটারের ভাড়া দ্বিগুণ করার অভিযোগ উঠেছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন গ্রাহকরা।
গ্রাহকদের অভিযোগ, চলতি জানুয়ারি মাসে হুট করেই গ্যাসের প্রিপেইড মিটারের ভাড়া হিসেবে ১০০ টাকার পরিবর্তে ২০০ টাকা কেটে নিচ্ছে তিতাস। দোকানে কার্ড রিচার্জ করতে গেলে বিষয়টি তাদের নজরে আসে।
এম রহমান নামে এক গ্রাহক বলেন, গ্যাস বিল দিতে গিয়ে দেখি মিটার ভাড়া বাবদ ২০০ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। আগে যা ছিল ১০০ টাকা। আমাদের কিছু না জানিয়ে মিটার ভাড়া দ্বিগুণ করা হলো। এমনিতেই সব কিছুর দাম বেশি। এগুলো দেখার কি কেউ নেই?
এ বিষয়ে তিতাস গ্যাসের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) প্রকৌশলী মো. সেলিম মিয়া বলেন, ‘এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের একটি অর্ডার দেখেছি। এর বেশি কিছু বলতে চাই না।’
অন্যদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখব।
তথ্যমতে, ২০১৭ সালে বাসাবাড়িতে গ্যাসের প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কাজ শুরু হয়। সে সময় প্রিপেইড মিটার ভাড়া ছিল ৬০ টাকা। ২০২২ সালের জুলাই মাসে ভাড়া ৬০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ টাকা করা হয়। বর্তমানে গ্রাহকদের কাছে তিতাসের তিন লাখ ২৮ হাজার ৬০০টি প্রিপেইড মিটার রয়েছে। জানুয়ারির আগে প্রতি মাসে ৩ কোটি ২৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা মিটার ভাড়া চার্জ হিসেবে আদায় করা হতো।
আইন অনুযায়ী তিতাস গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউশন চার্জ ও ভোক্তাপর্যায়ে মূল্যহার পরিবর্তনের প্রস্তাবের বিষয়ে আগ্রহী পক্ষগণকে গণশুনানি প্রদানপূর্বক বিস্তারিত পর্যালোচনা করে আদেশ দিয়ে থাকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। তবে মিটার ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে কিছুই জানে না সংস্থাটি।
এ বিষয়ে বিইআরসি’র সদস্য ড. মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, তিতাস মিটার ভাড়া বাড়িয়েছে কিনা এর সত্যতা আমাদের জানা নেই। আমাদের সঙ্গে তিতাসের কোনো ফাংশনাল সম্পর্ক নেই। বিইআরসি শুধু একটি নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা।
কনজ্যুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, গ্যাসের বিলের মধ্যেই মিটার চার্জ সমন্বয় করে নেওয়ার কথা। কিন্তু তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ আলাদাভাবে মিটার চার্জ নিচ্ছে। এটা নেওয়ার এখতিয়ার তাদের নেই। বিল বাড়ানোর কোনো এখতিয়ারও তিতাসের নেই।