ব্রিটিশ কাউন্সিল, বাংলাদেশে অবস্থিত ব্রিটিশ হাই কমিশন ও ইতালিয়ান দূতাবাস স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক একটি আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এ প্রতিযোগিতায় ডেলিভারি পার্টনার হিসেবে রয়েছে দৃক পিকচার লাইব্রেরি বাংলাদেশ এবং সাপোর্টিং পার্টনার হিসেবে রয়েছে পিকচার পিপল ইউকে ও ইতালির ফন্ডাজিওনি ইউনিভার্ডে। ব্রিটিশ কাউন্সিল, ব্রিটিশ হাই কমিশন ও ইতালীয় দূতাবাসের নিকট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা ও প্রশমন বিষয়ক আলোচনায় তরুণদের মতামত শোনা ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারমূলক বিষয়। তাদের এ আয়োজনের লক্ষ্য হল ভিজ্যুয়াল আর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণদের মাঝে স্থানীয় জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
পটভূমি
জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্কট এখন মানবতার অস্তিত্বের জন্য অন্যতম বড় হুমকি। ইতোমধ্যে, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পরিবেশগত খাতে এর প্রভাব লক্ষণীয়। বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোসহ বিশ্বজুড়ে সকল দেশের সরকারের নিকট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব শনাক্ত ও মোকাবিলা করা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ সরকার বর্তমানে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সভাপতিত্ব করছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়কে গুরুত্ব সহকারে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। যুক্তরাজ্য ও ইতালির সহ-সভাপতিত্বে এ বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কপ২৬ সম্মেলন ও এ বিষয়ক বিভিন্ন অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে এ আলোকচিত্র প্রতিযোগিতাটি আয়োজিত হচ্ছে। এসব আয়োজনে অসংখ্য পক্ষ ও এজেন্সির অবদান রয়েছে; এদের মধ্যে তরুণরাও রয়েছে। ঐতিহাসিকভাবে, তরুণদের মতামতকে প্রায়ই আলোচনার জন্য গৌণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়; তাদের দৃষ্টিভঙ্গি, আইডিয়া ও সমাধানগুলো সরকারি নেতৃবৃন্দ ও কর্মকর্তাদের একান্ত আলোচনায় সঠিকভাবে উঠে আসে না বা গুরুত্ব সহকারে বিবেচিত হয় না। যুক্তরাজ্য ও ইতালি উভয় সরকারই ২০২১ এর নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া কপ২৬ গ্লাসগো সম্মেলন ও সেপ্টেম্বরে মিলানে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইয়ুথ কপ-এ বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে তরুণদের সাথে আলোচনার ক্ষেত্রে দুরত্ব কমাতে চায়; যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের সমাধানে তরুণদের দীর্ঘমেয়াদী অন্তর্ভুক্তি, অংশগ্রহণ, দক্ষতার বিকাশ নিশ্চিত হবে।
আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনী
আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার থিম হচ্ছে ‘এ বেটার টুমরো’ এবং নিম্নে উল্লেখিত ক্যাটাগরিতে আলোকচিত্র জমা দেয়া নেয়া হবে-
১) আমার সুন্দর পৃথিবী (এ বিউটিফুল প্ল্যানেট): শহুরে উন্নয়ন আমাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থলের ক্ষতি করছে এবং স্থানীয় প্রজাতিগুলোকে নির্মূল ও বিলুপ্ত করে ফেলছে। অংশগ্রহণকারীদের এমন একটি পরিস্থিতির আলোকচিত্র নিতে হবে যেখানে উন্নয়নও ঘটেছে এবং জৈব বৈচিত্র্যও সংরক্ষিত হচ্ছে।
২) সঙ্কটে পৃথিবী (প্ল্যানেট ইন ক্রাইসিস): উর্বর মাটি অনুর্বর হয়ে যাওয়া, বন উজাড় হওয়া, নদী মরে যাওয়া বা গতিপথ পরিবর্তন করা ইত্যাদি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলো আলোচিত্রে উঠে আসতে পারে। তবে, এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে যে, সকল পরিবেশগত বিপর্যয় জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়।
৩) পৃথিবীর জন্য আশা (হোপ ফর দ্য প্ল্যানেট): আমরা আমাদের গ্রহের রক্ষক হিসেবে ব্যর্থ হয়েছি, কিন্তু আমরা কি আমাদের ভবিষ্যতের রূপকার হিসেবে ব্যর্থ হয়েছি? আমাদের মাঝে গ্রেটা থানবার্গসরা কোথায়? অংশগ্রহণকারীদেরকে তাদের আলোকচিত্রে অ্যাক্টিভিজিম, উদ্ভাবন, সৃজনশীলতা ও নিখুঁত অধ্যবসায়, যা মানুষের অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ এমন বিষয়গুলো তুলে ধরার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে।
খ্যাতিমান আন্তর্জাতিক বিচারকদের একটি প্যানেল (দৃক পিকচার লাইব্রেরি লিমিটেড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. শহিদুল আলম, যুক্তরাজ্যের পিকচার পিপল’র পরিচালক নিক ড্যানজিগার, ইতালিয়ান ফটোগ্রাফি অ্যাসোসিয়শনের সদস্য ও ইতালির আন্তর্জাতিক উদ্যোগ রিওয়াইল্ডিং ইউরোপ’র বোর্ড সদস্য ব্রুনো ডি অ্যামিসিস) বিজয়ী ছবি নির্বাচন করবেন।
উক্ত আয়োজনের পার্টনাররা নভেম্বরে কপ২৬ গ্লাসগো সম্মেলনের সাথে একত্রে ঢাকায় সরাসরি উপস্থিতির মাধ্যমে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী আয়োজনের পরিকল্পনা করছে; এছাড়া এটি গ্লাসগো ও মিলানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রদর্শিত হবে। গ্র্যান্ড প্রাইজ বিজয়ী এবং প্রতিটি বিভাগ থেকে বিজয়ী ও রানার্স আপসহ ৩০টি নির্বাচিত ছবি প্রদর্শিত হবে।নির্দেশিকা
সকল ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী বর্তমানে বাংলাদেশে বসবাসরত তরুণ বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য প্রতিযোগিতাটি উন্মুক্ত রয়েছে। প্রতিযোগীদেরকে তাদের ছবি জমা দিতে হবে এ ওয়েবসাইটে- যঃঃঢ়ং://ংঁনসরংংরড়হফৎরশ.পড়স। একজন প্রতিযোগী সর্বোচ্চ ৫টি ছবি জমা দিতে পারবেন। প্রত্যেক ছবির জন্য বাংলায় ও ইংরেজিতে যথাযথ ক্যাপশন লিখতে হবে। ছবির রঙ সাদাকালো অথবা রঙিন উভয়ই গ্রহণযোগ্য, এছাড়াতা উচ্চ রেজুলেশন (সর্বনিম্ন ৪০০০ পিক্সেল) এবং ছবির ফরম্যাট হতে হবে জেপিইজি। অবশ্যই অরজিনাল ছবি জমা দিতে হবে। কোনো ধরণের ডিজিটাল ম্যানিপুলেশন (কেটে দেয়া, যুক্ত করা, অথবা কোনো উপাদান পরিবর্তন করা) গ্রহণযোগ্য নয়। মূল ছবিকে তাৎপর্যপূর্ণভাবে পরিবর্তন করে ফেলে না এমন সীমিত কনট্রাস্ট, ব্রাইটনেস এবং ফিল্টারের ব্যবহার প্রযোজ্য হবে। ছবি জমা দেয়ার শেষ তারিখ আগামী ২১ আগস্ট।