 অনলাইন সংস্করণ
অনলাইন সংস্করণ ২২:০৩, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২১
২২:০৩, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২১
মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা সবার জন্য সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য করার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করছে বাংলাদেশ ভিত্তিক উদ্ভাবনী ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল হসপিটাল। সম্প্রতি, প্রতিষ্ঠানটি সুইজারল্যান্ডের অর্থায়নে উইনরক ইন্টারন্যাশনাল পরিচালিত আশ্বাস প্রকল্পের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করছে। প্রকল্পটি মানব পাচারের শিকার পুরুষ ও নারীদের পুনর্বাসনে কাজ করছে, আর বর্তমানে ডিজিটাল হসপিটাল তাদের বিভিন্ন ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে এবং এতে এখনও নতুন সদস্য যোগদান করছে।
স্বাস্থ্য প্যাকেজ স্বাধীন (ডিজিটাল হসপিটাল প্রদত্ত) -এ রয়েছে প্রতি মাসে ১৫০ মিনিট পর্যন্ত (ব্যবহারকারী এবং তার পরিবার উভয়ের জন্য) বিনামূল্যে ২৪/৭ ডক্টর কলের পাশাপাশি হাসপাতালে থাকার কাভারেজ হিসেবে এক লাখ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে ফ্রি হেলথ ক্যাশব্যাক, কোভিড-১৯ আইসোলেশন কাভারেজ হিসেবে ৫০০০ টাকা এবং ১৬০০ টাকা ওপিডি কাভারেজ, তিন মাসের জন্য। প্যাকেজটিতে আরও রয়েছে সারা দেশের এক হাজারেরও বেশি হাসপাতাল, ফার্মেসি এবং ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে পণ্য/সেবায় ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়।
এছাড়া, সুবিধাভোগীরা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্টের ভিত্তিতে পরামর্শ, হেলথ ক্যাম্প এবং অনলাইন প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ পাবেন।
২০২২ সালে প্রকল্পটির শেষ নাগাদ, পাচারের শিকার পুরুষ ও নারীদের একটি বিশাল অংশকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে বিভিন্ন উপায়ে সাহায্য করার পরিকল্পনা করেছে আশ্বাস। এর মধ্যে রয়েছে সুবিধাভোগীদের উন্নত স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সাশ্রয়ী ও মানসম্পন্ন স্বাস্থ্য সেবা প্রদান। কারিতাস, অগ্রগতি সংস্থা, সেন্টার ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন স্টাডিজ (সিডব্লিউসিএস), ঢাকা আহছানিয়া মিশন (ডিএএম) এবং রাইটস যশোরের মতো সামাজিক সুরক্ষা অংশীদারদের সহযোগিতায় স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হবে।
প্রত্যাবাসন এবং পুনরুদ্ধারের পর, পাচারের শিকার পুরুষ ও নারীরা মানবেতর জীবনযাপন, অনুন্নত স্যানিটেশন, অপর্যাপ্ত পুষ্টি এবং ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, কর্মক্ষেত্রের সঙ্কটময় অবস্থা এবং মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবার অভাবের কারণে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগতে পারেন। এছাড়া, পাচার হওয়া নারীদের প্রায়শই সামাজিক কুপ্রথার মতো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। তাই, তাদের আত্মবোধ পুনর্গঠন, অসহায়ত্বকে বুঝতে এবং তাদের মানসিকভাবে শক্তিশালী করতে সহায়তা করার লক্ষ্যে পাচারের শিকার পুরুষ ও নারীদের প্রয়োজনীয় মানসিক ট্রমা সংক্রান্ত মনোসামাজিক পরামর্শ প্রদান করে আশ্বাস।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে দুই লাখ মানুষ পাচারের শিকার হয়েছে। এছাড়া, বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, দরিদ্রদের ওপর বৈশ্বিক মহামারির নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কারণে আগামী বছরগুলোতে মানব পাচার আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞগণ। এর কারণ অনেক মানুষ আর্থিক কষ্ট লাঘবের জন্য নতুন সুযোগ খুঁজবে এবং মানব পাচারকারীরা এর সুযোগ নিবে।
ডিজিটাল হসপিটালের সিসিও এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্ড্রু স্মিথ বলেন, “পাচারের শিকার অধিকাংশ মানুষ মানসিক এবং শারীরিক ট্রমার শিকার হন। সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে পুনর্বাসনে তাদের নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় (সামাজিক কুপ্রথা জন্য), যা কিনা সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনের অন্যতম প্রধান শর্ত। এসব নারী-পুরুষদের কাউন্সেলিং, আইনি সেবা এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে সহায়তা প্রদানে কাজ করছে আশ্বাস। আর এখন, মানব পাচারের শিকার ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে আশ্বাসের সাথে যোগ দিয়েছে ডিজিটাল হসপিটাল। কারণ দেখা যায়, এসব মানুষ প্রায় সময় খরচ বেশি ও সহজলভ্য নয় বলে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পারেন না। সকল সামাজিক ও ভৌগলিক বাঁধা অতিক্রম করে আমরা সমাজের একটি অংশ/পুরো সমাজকে সর্বদা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সহায়তা প্রদান করবো, কারণ আমরা বিশ্বাস করি সবার সুস্থ থাকার অধিকার রয়েছে।”
বর্তমানে, মানব পাচারের প্রবণতা বেশি এমন ৫টি জেলায় প্রকল্পটির কার্যক্রম চলছে। জেলাগুলো হচ্ছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং যশোর।