নারী দিবস মানেই বেগুনী রঙয়ের পোশাক। আত্মসম্মান, মর্যাদা আর দৃঢ় লক্ষ্যের প্রতিচ্ছবি এই রঙ। তবে নারী দিবসের মূলমন্ত্রের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে চলে এমন রঙ কিন্তু শুধু এই একটিই নয়।
প্রতিটি রঙয়ের পেছনেই লুকিয়ে থাকে ভিন্ন এক অর্থ। আত্মসম্মান আর আত্মমর্যাদার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে পার্পল বা বেগুনি রঙকে ভোটাধিকার আন্দোলনে বেছে নিয়েছিলেন নারীরা। সেই থেকে পার্পলকেই নারী দিবসের রঙ হিসেবে ধারণ করা হচ্ছে।
তবে শুধু পার্পলই নয়, নারী দিবসের মূলভাবের সঙ্গে খুব সহজেই মিলে যায় এমন আরও কিছু রঙয়ের পোশাক আপনি পড়তে পারেন এবারের নারী দিবসে।
সানশাইন ইয়োলো-প্রফুল্লতার প্রতীক
হুট করে একটা উজ্জ্বল হলুদ রঙয়ের কিছুর দিকে চোখ পড়লে কেমন লাগে আপনার? আনন্দ আর প্রফুল্লতায় মনটা ভরে যায় না? ঠিক একই কারণে নারী দিবসে হলুদ বা হালকা হলুদ হয়ে উঠতে পারে আপনার পোশাকের রঙ। উজ্জ্বল হলুদটাও বেশ মানানসই। ৮ মার্চ নারীদের অধিকার আদায়ের দিন, নতুন করে বাঁচার দিন। পুরুষের পাশাপাশি পায়ে পা মিলিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণার দিন। আর সেই অনুপ্রেরণা আর বিজয়ের আনন্দকে হলুদ রঙয়ে উদযাপন করাই যায়।
সাদা-শুভ্রতার প্রতীক
বিশুদ্ধতা, শুভ্রতা আর সততাকে ফুটিয়ে তোলে সাদা রঙ। নারী দিবসের উৎপত্তি যে ঘটনাটিকে ঘিরে, সেই ভোটাধিকার আন্দোলনেরও অন্যতম এক রঙ ছিল সাদা। সাদা রঙকে যেখানে এক কথা 'ভালো' হিসেবে দেখা হয় সবখানে, নারীরাও সমান তালে সামনে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে নিজেকে যোগ্য হিসেবে প্রকাশ করতে এগিয়ে রেখেছিল সাদাকে। তাই এবারের ৮ মার্চে পোশাকে আপনি বেছে নিতে পারেন সাদা রঙকেও।
হালকা নীল-শান্তির প্রতীক
নীল রঙ নিজেই প্রশান্তির রঙ। তবে নীলের অনেকগুলো শেড আছে। বিশেষ করে আপনি যদি পানির হালকা নীল, অ্যাকুয়া নীলকে বেছে নেন, তাহলে সেটি শুধু প্রশান্তিই নয়, উজ্জ্বলতাও ছড়াবে। শাড়ি পরুন বা অন্য পোশাক, নীলটা চমৎকার মানিয়ে যাবে নারী দিবসের প্রতিপাদ্যের সঙ্গে।
সবুজ-আশা ও প্রকৃতির প্রতীক
ভোটাধিকার আন্দোলনের আরেকটি অন্যতম রঙ ছিল সবুজ। সবুজ সবার মনে আশা জাগিয়ে তোলে। ভালো অনুভূতি, ভালো একটা ভবিষ্যতের স্বপ্ন—এর পুরোটা ঘিরেই থাকে সবুজ। এবার চাইলে বেগুনীকে পাশ কাটিয়ে সবুজ রঙকে পোশাকের অংশ হিসেবে বেছে নিতেই পারেন।
আগুন কমলা-সাহসিকতার প্রতীক
সাহসের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার এবং টিকে থাকার গল্পকে সজোরে প্রকাশ করে আগুনে কমলা রঙ। হালকা সাদা বা সোনালী যেকোনো রঙয়ের সঙ্গে মিলিয়ে নিয়ে এই নারী দিবসে চমৎকার একটা কম্বিনেশন করতে পারেন আপনি ফায়ারি অরেঞ্জের।
গোলাপি-নারীত্বের প্রতীক
গোলাপি বা পিংক নারীর কাছে গতানুগতিক রঙ মনে হতে পারে। বাস্তবিক দিক দিয়ে আপনি যদি নারী হিসেবে নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ট এবং গর্বিত বোধ করেন, সেক্ষেত্রে গোলাপি রঙ হতে পারে নিজেকে প্রকাশ করার রঙ। একইসঙ্গে এই রঙটি ভালোবাসা আর সহানুভূতিকেও প্রকাশ করে। এ বছর তাহলে ভালোবাসা আর সম্প্রীতির এই রঙকে পরেই দেখুন না।
লাল-শক্তির প্রতীক
অন্য যে রঙকেই আপনি হেলাফেলা করেন না কেন, লাল কিন্তু রাজত্ব করে সব আয়োজনেই। ১ মিনিট থমকে গিয়ে হলেও অনেকের ভিড়ে লাল রঙয়ের দিকে চোখ যায় সবার। শক্তি আর ভালোবাসার প্রতীক লালকে তাই এবার নারী দিবসে গায়ে জড়িয়ে নিতেই পারেন।
নারী দিবসের পোশাক হিসেবে গাঢ় বা কালচে রঙ বেছে না নেওয়াই ভালো। উৎসবের উদযাপনটা ভারিক্কী বা গম্ভীর কোনো রঙ দিয়ে নয়, হওয়া চাই মন ভালো করে দেওয়া, আনন্দে পরিপূর্ণ, ভালোবাসা, ভরসা আর বিশুদ্ধতার রঙ দিয়ে।