প্রযুক্তির অগ্রগতির এ সময়ে স্মার্টফোন মানুষের জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ। করোনাভাইরাস মহামারীর এ সময়ে আরও বেশি স্মার্টফোন প্রয়োজনীয় গেজেটে পরিণত হয়েছে। যদিও স্মার্টফোন অতিরিক্ত ব্যবহারে মানসিক স্বাস্থ্যসহ নানারকম ক্ষতির কথাই এতদিন জানিয়েছে বিভিন্ন গবেষণা।
এবার এক গবেষণা বলেছে, দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ফোন ব্যবহারে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয় না। সম্প্রতি নতুন এ গবেষণার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে ‘টেকনোলজি, মাইন্ড অ্যান্ড বিহেভিয়র’ নামক জার্নালে। যুক্তরাজ্যের ল্যানকাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্ভহিদার শ’র নেতৃত্বে গবেষণা দলটি এ গবেষণাটি করে।
এতে বলা হয়েছে, স্মার্টফোন ব্যবহারের ওপর কোনো ব্যক্তির দুশ্চিন্তা, উত্তেজনা, হতাশা, অবসাদ কিংবা চাপ নির্ভর করে না।
গবেষণাটিতে ১৯৯ জন আইফোন এবং ৪৬ জন অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীর গতিবিধির ওপর লক্ষ রেখে পরীক্ষা চালানো হয়। পুরো এক সপ্তাহে মোট কতটা সময় স্মার্টফোনে কাটাচ্ছে সে হিসাব করা হয়। একইসঙ্গে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ কিনা, তা জিজ্ঞাসা করা হয়। দুশ্চিন্তা কিংবা অবসাদে ভোগেন কিনা, সে পরীক্ষাও করা হয়। স্মার্টফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হয় কিনা, হলে কী ধরনের সমস্যা হয়, তাও জেনে নেন গবেষকরা।
দীর্ঘ এ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ব্রিটেনের গবেষকরা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছান, স্মার্টফোন ব্যবহার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না।
স্মার্টফোন ব্যবহার মানসিক চাপ তৈরি করে, এ কথা তাহলে কেন বলা হয়? গবেষকদের মতে, আসলে অনেকেই দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ব্যবহার করে থাকেন। এতক্ষণ ব্যবহার করা হচ্ছে- এ ভাবনা থেকেই আসে দুশ্চিন্তা। তারা আরও জানান, একজন প্রাপ্তবয়স্ক যদি মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার সময় কমিয়ে দেন, তাহলে তিনি মানসিকভাবে বেশি খুশি বা চাপমুক্ত থাকবেন, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। তবে ইতোমধ্যে যারা ক্লিনিক্যালি অবসাদগ্রস্ত এবং উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন তাদের চেয়ে বেশি সময় স্মার্টফোন ব্যবহার করেছেন এ গবেষণায় থাকা ১৯৯ জন আইফোন এবং ৪৬ জন অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী।
যদিও এর আগের গবেষণাগুলো মোবাইলের স্ক্রিন মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কথাই বলেছে। এমনকি ওয়ার্ল্ড হেলথ অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, মোবাইল ফোন ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন ছড়ায়, যা কয়েক ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।