ভার্চুয়াল র্যাম প্রযুক্তি খাতে বর্তমান সময়ের আলোচ্য বিষয়ে রূপ নিয়েছে। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার অন্ত নেই। মোবাইল ফোন নির্মাতাদের চটকদার বিজ্ঞাপনে গ্রাহকদের মনে তৈরি হয়েছে সংশয়।
প্রশ্ন উঠেছে ভার্চুয়াল র্যাম আদৌ কার্যকর নাকি শুধুই গ্রাহক টানতে স্টান্টবাজির অংশ?
সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে ভার্চুয়াল র্যাম ব্যবহার করার নামে গ্রাহক ঠকাচ্ছে হংকংভিত্তিক ট্রানশান হোল্ডিংসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান চীনা স্মার্টফোন নির্মাতা টেকনো। ভার্চুয়াল র্যাম বাড়ানোর ফলে উন্নত গেমিং পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে বলে প্রচারণা চালালেও আসলে এক ধরনের প্রতারণা।
জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটি তাদের টেকনো স্পার্ক ৮ প্রো এবং টেকনো স্পার্ক ৮ সি মডেলের ফোনে এ সুবিধা দিচ্ছে। যেমন টেকনো স্পার্ক ৮ প্রো-এর র্যাম আসলে ৬ জিবি। কিন্তু টেকনো সরাসরি উল্লেখ না করলেও তাদের বিজ্ঞাপনে দেখাচ্ছে ৯* জিবি র্যাম। তাই তো গ্রাহক মনে প্রশ্ন উঠেছে টেকনো ফোনে র্যাম আসলে কত জিবি?
স্মাটফোন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্টোরেজ যতবেশি ফাস্ট-ই হোক না কেন তা কখনোই ফিজিক্যাল র্যামের মতো পারফমেন্স দিতে পারবে না। তা ছাড়া ভার্চুয়াল র্যামের রয়েছে অনেক সীমাবদ্ধতা। অ্যান্ড্রোয়েড ফোনের যেই স্টোরেজ আছে সেগুলোর লিমিটেড লাইফস্প্যান থাকে। অর্থাৎ একটা নির্দিষ্ট রাইট/রি-রাইট করার হার থাকে। ফলে দেখা গেছে, এক্সটেন্ডেড ভার্চুয়াল র্যাম কাজে না এলেও বেশি ব্যবহারের কারণে অতিরিক্ত সোয়াপিং এবং রাইট/রি-রাইটের মাধ্যমে ফোনের স্টোরেজ লাইফস্প্যান কমিয়ে দেয়। একজন ভুক্তভোগী ঢাকার কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থী নকিব বলেন, আমি টেকনোর স্পার্ক ৮সি ফোনটি কিছু দিন আগে ক্রয় করি। মূলত গেম খেলার জন্য এ ফোনটি ক্রয় করি কারণ তারা জানায় এ ফোনে ৪ গিগাবাইট র্যাম রয়েছে, যা এক্সটেন্ডেড করে ৩ গিগাবাইট পর্যন্ত বাড়ানো যাবে। কিন্ত গেম খেলতে গিয়ে আমি কোনো সুবিধা পাচ্ছি না। ফোনের এক্সটেন্ডেড ৩ গিগাবাইট র্যামের কোনো উপকার পাচ্ছি না।
এ বিষয়ে ট্রানশান বাংলাদেশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রেজওয়ানুল হক বলেন, মেমোরি ফিউশন (ভার্চুয়াল র্যাম) পুরো শতভাগ কার্যকরী সেটা বলছি না তবে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কাজ করে। আর মেমোরি ফিউশন এটি নতুন কিছু নয়। গ্রাহক চাইলে মেমোরি ফিউশন সেগমেন্টের ফোন কিনবে না চাইলে কিনবে না।
প্রযুক্তি পণ্যের বাজার বিশ্লেষক মিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশ ও দেশের বাইরে বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা যায় ভার্চুয়াল র্যাম-এর এহেন প্রচার-প্রচারণা শুধুই বাংলাদেশসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশেই চলমান। এ ছাড়া ইউরোপ আমেরিকাতে একই ফোনে ভার্চুয়াল র্যামের কথা উল্লেখই থাকে না। স্পষ্টতই এটি এক ধরনের গিমিক। সুত্রঃ যুগান্তর