‘উইটসা এমিনেন্ট পার্সনস অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ নেতৃত্বদান এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অনন্য সাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার শেখ হাসিনাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
বিশ্বের ৮০টি দেশের সদস্যভুক্ত সংগঠন ‘ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্স’ তথ্যপ্রযুক্তির অলিম্পিক খ্যাত ‘উইটসা ২০২১’ পুরস্কার প্রদান করে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের বিশ্ব সম্মেলন ‘ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজি ২০২১ (ডব্লিউসিআইটি২০২১) এর তৃতীয় দিনে শনিবার উইটসা মহাসচিব ড. জেমস এইচ পয়জান্টের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
৩টি ক্যাটাগরিতে এবার বিভিন্ন দেশের বেশকিছু প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দিয়েছে উইটসা। অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম এবং বিসিএস সভাপতি শাহিদ-উল-মুনীর উপস্থিত ছিলেন।
পুরস্কার পাওয়ার কারণ হিসেবে আরও বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে সরকার পরিচালনা করছেন। মৌলবাদ, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি শেখ হাসিনা বরাবরই বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য খাদ্যের নিশ্চয়তা ও ভোটাধিকার নিশ্চিত করে গেছেন, জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তার সময়েই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। সেই সঙ্গে দেশের আর্থ-সামজিক উন্নয়নে তরান্বিত হয়েছে শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণে।
এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানজনক সব ডিগ্রি অর্জন করে বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে এনেছেন তিনি এবং নারী ও কন্যাশিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করায় বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে ইউনেস্কোর বিশেষ সম্মাননার মতো আরও অনেক সম্মানজনক পুরস্কার ও স্বীকৃতি অর্জন করেছেন শেখ হাসিনা।
তিনি জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ অর্জন করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। দেশের প্রতিটি অঞ্চলে ও প্রতিটি নাগরিকের কাছে তথ্য ও প্রযুক্তি সহজলভ্য করে দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করায় বিশেষ অবদান রাখার কারণে প্রধানমন্ত্রীকে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন ‘আইসিটিস ইন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড ২০১৫’–এ ভূষিত করে।
এ বিষয়ে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, উইটসা এমিনেন্ট পার্সনস অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার লাভ করায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্ববোধ করছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে বিগত ১২ বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের স্বীকৃতিস্বরূপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উইটসা এমিনেন্ট পার্সনস অ্যাওয়ার্ড প্রদান করায় আমি উইটসার মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, এই পুরস্কার লাভ করায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন, বিকাশ ও উৎকর্ষ সাধনে আরও অনুপ্রাণিত হবে।
এ ছাড়া ভিন্ন তিনটি ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ আরও ৩টি পুরস্কার অর্জন করেছে। এগুলো হলো- ‘সাসটেইনেবল গ্রোথ/সার্কুলার ইকোনমি’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বিজিএমইএ, ‘ইনোভেশন ই-হেলথ সলিউশন’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে জাতীয় স্বাস্থ্য বাতায়ন-১৬২৬৩, এবং ‘ই-এডুকেশন অ্যান্ড লার্নিং’ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, মিয়ানমার, হংকং, নেপাল, তাইওয়ান, গ্রিস, রাশিয়া প্রভৃতি দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোগ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনের তৃতীয় দিনে শনিবার ই-কমার্স, সাইবার সিকিউরিটি, উইটসা অ্যাওয়ার্ড এবং প্রযুক্তিব্যবসা বিষয়ক মোট ৮টি সেশন/সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকায় অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অন ইনফরমেশন টেকনোলজির ২৫তম আসর ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে গত বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।