তরুণ উদ্যোক্তাদের খোঁজে শুরু হওয়া উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা ’ফুড ফ্রন্টিয়ার্স 2.0’ এ বিপুল সাড়া পাওয়া গেছে। আজ শনিবার (২১শে জানুয়ারি, ২০২৩) পর্যন্ত মোট ১২৫ টি আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ২২ জন নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন। এই দিকে নিরাপদ, পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ গ্রহণে উৎসাহিতকরণ এবং সৃজনশীল ব্যবসায়িক ধারণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শুরু হওয়া এই উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতার আবেদনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামীকাল রোববার (২২ শে জানুয়ারি, ২০২৩।)
গত ২ ই ডিসেম্বর ২০২২ থেকে এই ব্যাতিক্রমী ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছিল। ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে মূল্ধারার সংবাদ মাধ্যম এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচার-প্রচারণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে রোড শো করা হয়েছে। এই ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ হচ্ছে: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শের-ই-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। রোড শো গুলোতে ১২শর অধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া আয়োজন করা হয় একটি ‘ওয়েবিনার’। ওয়েবিনারের মাধ্যমে প্রতিযোগিতার আবেদনকে উৎসাহিত করা হয়েছে। ওয়েবিনার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সান বিজনেস নেটওয়ার্কের মাহমুদুল হাসান, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের প্রফেসর এস এম আরিফুজ্জামান, এবং টেন মিনিট স্কুলের কনসালট্যান্ট ও সোশ্যাল ইনফ্লুয়েন্সার (Social influencer) সাকিব বিন রশিদ।
’ফুড ফ্রন্টিয়ার্স ২.০’ শিরোনামে প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করছে স্কেলিং আপ নিউট্রিশন (সান / SUN) বিজনেস নেটওয়ার্ক, যা বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন/ GAIN ), এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিওএফপি / WFP) সহ পরিচালিত হচ্ছে। বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে ক্লিক করুন এই লিংকটিতে-https://foodfrontiers.live/
এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য হল: পুষ্টিকর খাদ্য পণ্যকে নিম্ন বা সীমিত আয়ের ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্যে উদ্ভাবনী উপায়গুলি চিহ্নিত করা। পাশাপাশি টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা আনয়ন ও সামাজিক উদ্যোগে ব্যবসায়িক দক্ষতা আনতে তরুণ উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা তৈরি করা। একইসঙ্গে টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থার মাধ্যমে পুষ্টিকর খাদ্য পণ্যের চাহিদা তৈরি করা ও উদ্ভাবনী বিপণন ক্যাম্পেইন চিহ্নিত করা।
প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত বিজয়ীরা তাদের উদ্ভাবনী ব্যবসায়িক ধারণা বাস্তবায়ন, ব্যবসা সম্প্রসারণ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য মোট ৩৫,৫০০ মার্কিন ডলারের অনুদান ও ‘প্রি-সীড তহবিল’ পাবেন।তিন ক্যাটাগরিতে ৬ জন উদ্যোক্তা এবং একজন ব্যক্তিকে পৃথকভাবে চূড়ান্ত বিজয়ী হিসেবে পুরস্কৃত করা হবে। তিনটি ক্যাটাগরির মধ্যে একটি হচ্ছে: নিম্ন আয়ের ভোক্তাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য ’অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসায়িক মডেল’। দ্বিতীয়টি হচ্ছে ‘যুগান্তকারী প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন’ ধারণা। তৃতীয়টি হচ্ছে ‘উদ্ভাবনী বিপণন প্রচারাভিযান।’
এই প্রতিযোগিতার আবেদনের শেষ তারিখ ছিল ১৫ জানুয়ারী, ২০২৩। আবেদনকারীদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া পাওয়ার কারণে এর সময়সীমা বাড়িয়ে ২২শে জানুয়ারি, ২০২৩ পর্যন্ত করা হয়। প্রতিযোগিতায় নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সরবরাহ ও গ্রহণে উৎসাহিত করতে নতুন ব্যবসায়িক মডেলের উদ্ভাবন, সাশ্রয়ী মূল্য এবং খাদ্যের গুণগত মানে সহজ প্রযুক্তিগত সমাধানে যেসব উদ্যোক্তারা কাজ করবেন তাদের যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে। আবেদনকারীদের মধ্য থেকে প্রথম যাচাই-বাছাই শেষে সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হবে। সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে প্রতিযোগীরা নিরাপদ এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ ও এই সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবসায়িক মডেল অভিজ্ঞ বিচারকদের সামনে তুলে ধরবেন।
সংক্ষিপ্ত তালিকা শেষে চূড়ান্ত বাছাইকৃত ১০ টি প্রতিষ্ঠান বা দল ব্যবসায় ধারণা প্রদানের জন্য বিনিয়োগ সংক্রান্ত প্রস্তুতি, প্রশিক্ষণ ও ব্যবসা সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে ঢাকায় তিন দিনের আবাসিক বুটক্যাম্প সেশনে অংশ নিবে। আবাসিক বুটক্যাম্পে দেশের শীর্ষ স্থানীয় ও প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি, ব্যবসায়ীরা ভবিষ্যতে তরুণ উদ্যোক্তাদের করণীয় ও পরিকল্পনা নিয়ে পরামর্শ দিবেন। এই আয়োজনে- কৌশলগত অংশীদার হিসেবে থাকছে জাতীয় ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্পের সংস্থা এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ।