ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আর চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এক নয়। আমরা বিশ্বে প্রথম ডিজিটাল বাংলাদেশ বলেছি। এর মানে হচ্ছে শোষণ দারিদ্রমুক্ত, প্রযুক্তিনির্ভর উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ তথা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা। আমাদের ৮ বছর পর বিশ্ব অর্থর্নৈতিক ফোরাম প্রধানত শিল্পোন্নত দেশগুলোর মানব সংকট কাটাতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা বলেছে। অন্যদিকে জাপান সেসাইটী ৫.০ এর কথা বলেছে। জাপান মনে করে সোসাইটী ৫.০ মানবিক আর চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যান্ত্রিক। আমাদেরকে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে, তবে আমাদের মতো করে। এই বিপ্লব সকল দেশের জন্য এক নয়-একই নীতি-কৌশল ও পদ্ধতি সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তাই অনুকরণ নয় মেধা ও সৃজনশীলতা দিভয় আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বানাবো। তিনি বলেন ডিজিটাল বাংলাদেশ বিণির্মানের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন ক্ষেত্রের রূপান্তর জাতীয় জীবনের বিস্ময়কর এক অর্জন। তবে শিক্ষার ক্ষেত্রে সে তুলনায় ডিজিটাল রূপান্তর না হওয়ায় ডিজিটাল বাংলাদেশের পরিপূর্ণ অর্জন পাওয়া চ্যালেঙ্জিং হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, প্রচলিত বিষয় নিয়ে প্রচলিত ধারার শিক্ষা বিস্তার ডিজিটাল যুগের জন্য সামাঞ্জস্যপূর্ণ নয়। সামনের দিনে প্রচলিত পাঠদান পদ্ধতি কিংবা ডিজিটাল যুগে এসব সচল থাকবে না।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনাল আয়োজিত টেকসই উন্নয়নের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বিইউপি‘র ফ্যাকাল্টি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজির ডিন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল গোলাম ফারুক এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিইউপি‘র উপাচার্য মেজর জেনারেল মো: মোশফেকুর রহমান, উপ-উপাচার্য প্রফেসর এম আবুল কাশেম মজুমদার প্রমূখ বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিণির্মানের প্রেক্ষাপট. লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, আমাদের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রযুক্তি গ্রহণ ও আমাদের মানব সম্পদ কাজে লাগানো।এই দুইয়ের ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারলে আমাদের জন্য বড় বিপদ অনিবার্য। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির মাঝে স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে যে রূপান্তর ঘটানো দরকার তা নিহিত রয়েছে। দেশে কম্পিউটার প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন,৭৩ সালে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন্স ইউনিয়ন ও ইউপিই্উ এর সদস্য পদ অর্জন এবং ৭৫ এর ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জাতির পিতা ডিজিটালাইজেশনের বীজ বপণ করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে কম্পিউটারের ওপর থেকে শুল্ক ও ভ্যাট প্রত্যাহার, অনলাইন ইন্টারনেট চালু করে জনগনের হাতে ইন্টারনেট ও কম্পিউটার পৌছানোর ব্যবস্থা করেন।। তিনি সাধারণের নাগালে মোবাইল পৌঁছে দিতে মোবাইল ফোনের মনোপলি ব্যবসা বন্ধ করে চারটি মোবাইল কোম্পানিকে লাইসেন্স প্রদান এবং ভিস্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেট চালুসহ যুগান্তকারী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে ডিজিটাইজেশনের রোপিত বীজটিকে চারা গাছে রূপান্তর করেন। ২০০৯ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত তারই ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় তা আজ বিরাট মহিরূহে রূপান্তর লাভ করেছে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ বিস্ময়কর ভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তি গ্রহণ করেছে। আর্থিক অন্তর্ভূক্তিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ অভাবনীয় অগ্রগতি অর্জন করেছে। তিনি বলেন, প্রচলিত ধারার ব্যাংকিং পদ্ধতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।