রকেটে চড়ে মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর পরিকল্পনা থেকে থেকে শুরু করে ইলেকট্রিক গাড়ির দুনিয়ায় বিপ্লব, বিজ্ঞানে একাধিকবার অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন ইলন মাস্ক। এমন কি মাটির নীচে টানেল খুঁড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব আনার কাজও প্রায় শেষ করে ফেলেছেন মার্কিন ধনকুবের। সম্প্রতি টুইটার কিনে শিরোনামে এলেও এবার মানব সভ্যতার ইতিহাসে নয়া অধ্যায় শুরু করতে চলেছে তিনি।
সম্প্রতি ইলন মাস্ক জানিয়েছেন মানুষের খুলির ভিতরে মস্তিষ্কে বিশেষ চিপ বসানোর কাজ করছে তাঁর সংস্থা। যা কানেক্ট হবে সরাসরি কম্পিউটারের সঙ্গে। শুনে কল্পবিজ্ঞানের গল্প মনে হলেও আগামী ৬ মাসের মধ্যে এই অসম্ভবকে বাস্তবে পরিণত করার ঘোষণা করেছেন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি। তাঁর দাবি প্রযুক্তি ব্যবহার করেই মানুষ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এই জন্য ইতিমধ্যেই কাজ চালাচ্ছে মাস্কের সংস্থা নিউরালিঙ্ক।
অনেকেই মনে করছেন এই প্রযুক্তি বাস্তবায়িত হলে বদলে যাবে মানব সভ্যতার ইতিহাস।
নিউরালিঙ্ক- এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে মানুষের খুলির ভিতরে একটি ছোট্ট কম্পিউটিং ডিভাইস বসানো হবে। কয়েনের মতো আকারের এই ডিভাইস বসানোর কাজ আগামী ৬ মাসের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংস্থাটি।
খুলির খুলির বসানো এই কম্পিউটার চিপটি সরাসরি মস্তিষ্কের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। ইতিমধ্যেই এই প্রোডাক্টের জন্য মার্কিন নিয়ামক সংস্থার কাছে আবেদন করেছে নিউরালিঙ্ক। অনুমোদন পেলেই ইমপ্ল্যান্টের কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে এলন মাস্কের সংস্থা।
কীভাবে এই প্রযুক্তি কাজ করবে তা বোঝানোর জন্য বাঁদরের মাথায় এই চিপ বসিয়ে পরীক্ষা করেছেন নিউরালিঙ্কের বিজ্ঞানীরা।
এমন মাস্ক জানিয়েছেন, “যে কোনও প্রোটোটাইপ তৈরি করা সহজ। কিন্তু সুরক্ষিত প্রোডাক্ট তৈরি খুবই কঠিন বিষয়।” উদাহরণ স্বরূপ ইলন মাস্ক বলেন চাঁদে যাওয়ার ভাবনা সহজ হলেও তা করে দেখানো খুবই কঠিন।
মঞ্চে একটি ডেমোতে এলন মাস্ক দেখিয়েছেন কী ভাবে নিউরালিঙ্ক ব্যবহার করে টাইপ করছে একটি বাঁদর। সেখানে কিবোর্ড স্পর্শ না করেই মস্তিষ্কের মাধ্যমে টাইপিং চালিয়ে যাচ্ছে বাঁদরটি।
ইলন মাস্ক জানিয়েছেন চাইলে এই ডিভাইস আপগ্রেড করা যাবে। তিনি বলেন, “আমি কখনই চাইব না আইফোন ১৪ বাজারে আসার পরেও আপনি আইফোন ১ মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়ান। তাই এই মস্তিষ্কের এই ডিভাইস আপগ্রেড করার সব সুযোগ থাকবে।”
যদিও শুধু মানব মস্তিষ্ক নয়, শরীরের অন্যান্য অংশেও এই ডিভাইস বসানোর কাজ চলছে। মাস্ক জানিয়েছেন এই মুহূর্তে একাধিক ডিভাইস তৈরির কাজ করছেন সংস্থার বিজ্ঞানীরা। মস্তিষ্ক ছাড়াও মেরুদণ্ডে এই চিপ ইমপ্ল্যান্টের ভাবনা চলছে বলে জানিয়েছেন এলন। তাঁর দাবি যে সব মানুষের স্নায়ু দুর্বল হয়েছে তাঁরা এই প্রযুক্তিতে বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। এছাড়াও মাস্ক জানান অন্য একটি ইমপ্ল্যান্টের মাধ্যমে দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে আনার কাজও করছেন বিজ্ঞানীরা।
ব্রেন কম্পিউটার ইন্টারফেসের মাধ্যমে যে সব মানুষের মস্তিষ্ক দুর্বল হয়েছে তাঁরা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন।