ঢাকা | রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১ |
৩৬ °সে
|
বাংলা কনভার্টার
walton

চিপ সংযোজনে মালেয়িশয়ায় নজর চীনা কোম্পানিগুলোর

চিপ সংযোজনে মালেয়িশয়ায় নজর চীনা কোম্পানিগুলোর
চিপ সংযোজনে মালয়েশিয়ায় নজর চীনা কোম্পানিগুলোর

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে চিপ নির্মাণ করতে চীনের কোম্পানিগুলো বিভিন্ন ধরনের কৌশল করছে। জানা গেছে, চীনের বেশ কিছু সেমিকন্ডাক্টর ডিজাইন কোম্পানি এখন মালয়েশিয়ার কিছু কোম্পানিকে দিয়ে উচ্চ প্রযুক্তির চিপের একাংশ সংযোজন করাচ্ছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, চীনের কোম্পানিগুলো মালয়েশিয়ার চিপ প্যাকেজিং ফার্মগুলোকে দিয়ে গ্রাফিকস প্রসেসিং ইউনিট নামের একধরনের চিপ সংযোজন করাচ্ছে। বিষয়টি সম্পর্কে সম্যক ধারণা আছে, এমন সূত্রগুলো রয়টার্সকে এ তথ্য দিয়েছে।

মালয়েশিয়ার কোম্পানিগুলো মূলত চিপ সংযোজন করছে, অর্থাৎ এ ক্ষেত্রে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বরখেলাপ করা হচ্ছে না বা চিপের ওয়েফার বদলে দেওয়া হচ্ছে না। ইতিমধ্যে বেশ কিছু মালয়েশীয় কোম্পানির সঙ্গে চীনা কোম্পানিগুলোর চুক্তি হয়েছে। তবে সূত্রগুলো মালয়েশীয় কোম্পানিগুলোর নাম প্রকাশ করতে রাজি হয়নি।

প্রযুক্তিতে চীনের অগ্রগতি ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র মরিয়া হয়ে উঠেছে। সে জন্য দেশটি চীনের কাছে চিপ তৈরির উপকরণ বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং সেই নিষেধাজ্ঞার আওতা দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু একই সঙ্গে কৃত্রিম টিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশ ঘটছে, সে জন্য উচ্চমানের চিপ তৈরির চাহিদা বাড়ছে। এ বাস্তবতায় চীনের ছোট সেমিকন্ডাক্টর ডিজাইন ফার্মগুলো দেশের ভেতরে উন্নত মানের প্যাকেজিং–সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে।

দুটি সূত্র রয়টার্সকে বলেছে, চীনের কিছু কোম্পানি উন্নত মানের চিপ প্যাকেজিং–সেবায় আগ্রহী।

বিষয়টি হলো, চিপের প্যাকেজিং উন্নত হলে এর কর্মনৈপুণ্য তাৎপর্যপূর্ণভাবে বেড়ে যেতে পারে। সে কারণে সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে প্যাকেজিং গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। প্যাকেজিংয়ের মধ্যে অনেক সময় চিপলেট তৈরির বিষয় থাকে, যেখানে চিপগুলো নিবিড়ভাবে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থাকে। তখন সেটা শক্তিশালী মস্তিষ্কের মতো কাজ করে।

সেমিকন্ডাক্টর শিল্পে একধরনের পরিবর্তন আসছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে চীনের কোম্পানিগুলো এখন চিপ সংযোজনের নতুন জায়গা খুঁজছে, আর সেই অনুসন্ধানে মালয়েশিয়া গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। চিপ সংযোজন এখনো মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কবলে না পড়লেও সে জন্য উচ্চমানের প্রযুক্তির প্রয়োজন। আশঙ্কা আছে, ভবিষ্যতে চীনে এই প্রযুক্তি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।

সেমিকন্ডাক্টর সরবরাহব্যবস্থায় মালয়েশিয়া গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ইউনিসেমের মতো চীনের চিপ প্যাকেজিং কোম্পানিগুলো এখন মালয়েশিয়ায় আসছে। নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে যেতে দেশের ভেতরে ও বাইরে যেন উৎপাদনব্যবস্থা সচল রাখা যায়, সে লক্ষ্যেই চীনের কোম্পানিগুলো এখন মালয়েশিয়ার দিকে ঝুঁকছে।

ইউনিসেম কোম্পানির চেয়ারম্যান বলেছেন, মালয়েশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো থাকায় চীনা কোম্পানিগুলো সেদিকে ঝুঁকছে। এ ছাড়া মালয়েশিয়ার অভিজ্ঞ জনবল ও উন্নত মানের যন্ত্রপাতি আরেকটি কারণ।

চীন মূলত সেমিকন্ডাক্টর সরবরাহব্যবস্থা বহুমুখীকরণের চেষ্টা করছে। বর্তমান বিশ্বে সেমিকন্ডাক্টর প্যাকেজিং সংযোজন ও পরীক্ষার বাজারের ১৩ শতাংশ মালয়েশিয়ার হাতে। দেশটির লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে তা ১৫ শতাংশে উন্নীত করা। এক্সফিউশন ও স্টার ফাইভের মতো বেশ কিছু চীনা চিপ কোম্পানি মালয়েশিয়ায় ব্যবসা সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছে। দেশটির প্রণোদনা ও কৌশলগত সুবিধা বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করছে।

শুধু মালয়েশিয়া নয়, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম ও ভারতের মতো দেশগুলো এখন মার্কিন–চীন বাণিজ্য ও প্রযুক্তিযুদ্ধের সুযোগে চিপশিল্পে নাম লেখাতে চাইছে। অর্থাৎ সেমিকন্ডাক্টর শিল্পের আওতা বাড়ছে। এর মধ্যে যেমন ভূরাজনৈতিক বিষয় আছে, তেমনি সরবরাহব্যবস্থার বিষয়ও জড়িত।

চিপ,চীন,মালেয়িশয়,মালয়েশিয়া
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Transcend