ঢাকা | শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ |
২৩ °সে
|
বাংলা কনভার্টার
walton

প্রথম মানুষের ব্রেনে বসল ‘ওয়্যারলেস ব্রেন চিপ’

প্রথম মানুষের ব্রেনে বসল ‘ওয়্যারলেস ব্রেন চিপ’
প্রথম মানুষের ব্রেনে বসল ‘ওয়্যারলেস ব্রেন চিপ’

ব্রেন-মেশিন নিয়ে চর্চা ছিল তুঙ্গে। ইলন মাস্কের স্টার্টআপ সংস্থা নিউরালিঙ্ক দাবি করেছিল তারা এমন ব্রেন-মেশিন বানিয়েছে যা মানুষের ব্রেনে ফিট করে দিলেই মন ও মস্তিষ্কের সব দুরারোগ্য ব্যধি সেরে যাবে। এই ব্রেন-মেশিন এতদিন গবেষণার স্তরে ছিল। এই প্রথম মানুষের শরীরে তার ট্রায়াল শুরু হল। স্পেস এক্স ও টুইটার কর্তা ইলন মাস্ক তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানিয়েছেন, প্রথবার মানুষের ব্রেনে বসানো হয়েছে ওই মেশিন। দিব্যি চলছে। মস্তিষ্কের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে ব্রেন-চিপ। এবার সব রোগ সেরে যাবে।

মহাকাশযাত্রায় ইতিহাস তৈরির পরে এবার মানুষের রোগ সারাতে নতুন করে আসরে নেমেছে ইলন মাস্কের সংস্থা নিউরালিঙ্ক। আমেরিকার এই নিউরোটেকনোলজির সংস্থার গবেষণা মানুষের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের জটিল রোগ নিয়ে। অবসাদ, উদ্বেগ, অবসেসিভ-কমপালসিভ ডিসঅর্ডার থেকে স্লিপিং ডিসঅর্ডার—মস্তিষ্কের জটিল রোগ সারাতে নতুন রকম 'ব্রেন-মেশিন' তৈরি করছে নিউরালিঙ্ক। ব্রেন-মেশিনের হিউম্যান ট্রায়ালের নির্দেশ দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

মানুষের মস্তিষ্কে মেশিন বসিয়ে জটিল রোগ সারানোর পদ্ধতি এই প্রথম। ইলন মাস্কের নিউরালিঙ্ক কর্পোরেশন এমন যন্ত্র তৈরি করছে যা কিনা মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি দেবে মানুষকে। মস্তিষ্কের ক্ষতও সারাবে। ইলন মাস্ক দাবি করেছেন, ডিমেনশিয়া, ডিপ্রেশন, পার্কিনসন্সের মতো রোগ সারাতে পারবে ব্রেন-মেশিন। এমনকী স্নায়ুর জটিল রোগও সারিয়ে তুলবে ধীরে ধীরে। প্রথমবার মানুষের ব্রেনে বসানোর পরে দেখা গেছে, নিউরনের হাল হকিকত পরিষ্কার দেখাচ্ছে ওই মেশিন। ব্রেনের কোথায় ক্ষত তৈরি হয়েছে, কোন স্নায়ুতে গণ্ডগোল তাও দেখাতে পারবে ব্রেন-মেশিন।

নিউরালিঙ্কের এই গবেষণায় সহযোগিতা করছে ডিফেন্স অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রোজেক্ট এজেন্সি। এই গবেষণার সঙ্গে জড়িত জাস্টিন স্যানচেজ জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে ২ লক্ষের বেশি মানুষ মস্তিষ্কের রোগে ভোগেন। ‘অ্যাংজাইটি অ্যান্ড ডিপ্রেসন অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা’ (ADAA) তাদের একটি গবেষণার রিপোর্টে বলেছিল, অতিরিক্ত উদ্বেগ থেকেই ‘জেনারালাইজড অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার’ (GAD) হয়।

প্রতি বছর বিশ্বের কয়েক কোটি মানুষ এই রোগে ভোগেন। এই ডিসঅর্ডার ছ’মাসের বেশিও স্থায়ী হয়। তখন তাকে ক্রনিক ডিসঅর্ডার বলে। তাছাড়া ‘অবসেসিভ-কমপালসিভ ডিসঅর্ডার’ (OCD) কমবয়সিদের একটা বড় সমস্যা। একটা আতঙ্ক বা ফোবিয়া কাজ করে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উদ্বেগ থেকে ফোবিয়া বা আতঙ্ক তৈরি হয় মনে। যার থেকেই উৎকণ্ঠা বাড়ে। ‘প্যানিক ডিসঅর্ডার’-এ আক্রান্ত হয় রোগী। ওষুধে এই রোগ সারে না। দীর্ঘদিনের কাউন্সেলিং করাতে হবে। বাইপোলার ডিসঅর্ডারের মতো রোগ অনেক সময় কাউন্সেলিংয়েও পুরোপুরি নির্মূল হয় না। ব্রেন মেশিন সেখানেই দারুণ কাজ করবে।

নিউরালিঙ্কের গবেষকদের দাবি, এই ডিভাইস তৈরি হয়েছে ছোট ইলেকট্রোড দিয়ে। তার মধ্যে এমন প্রোব আছে যা সহজেই মস্তিষ্কের কোষে ঢুকিয়ে দেওয়া যাবে। গবেষকদের দাবি, এই ডিভাইস মস্তিষ্কের ভেতরে কোনও ক্ষতি করবে না বা এর কোনও প্রতিক্রিয়াও দেখা যাবে না। মস্তিষ্কের কোষে প্রতিস্থাপন করলে এই যন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ কোষগুলিকে সারাতে পারবে। মস্তিষ্কের স্বাভাবিক ক্রিয়া ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবে। ব্রেন সার্জারির মতো ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারের দরকার পড়বে না।

ওয়্যারলেস ব্রেন চিপ,মানুষের ব্রেন
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Transcend