বৈরি আবহাওয়াজনিত ঘটনা বা রোগের কারণে হওয়া ফসলের ক্ষয়ক্ষতি শনাক্ত করতে রিমোট সেন্সিং ও ড্রোন আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তির ব্যবহার শেখার জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) প্রায় ২০ জন কর্মকর্তাকে প্রাথমিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকায় ‘শষ্য পর্যবেক্ষণ এবং ফসলের ক্ষতির মূল্যায়নের জন্য ড্রোন ও স্যাটেলাইট চিত্রের ব্যবহার’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সাত দিনব্যাপী এই কর্মশালার উদ্বোধন করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মলয় চৌধুরী ও বাংলাদেশে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং।
এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা যৌথভাবে আয়োজন করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও এডিবি। চলবে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং বলেন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান হুমকির প্রেক্ষাপটে কৃষি উৎপাদনশীলতা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ফসলের রোগ ও ক্ষয়ক্ষতির যথাযথ মূল্যায়ন জরুরি।
তিনি বলেন, “জলবায়ুর প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করতে উন্নত প্রযুক্তিসহ উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে আসা অব্যাহত রাখবে এডিবি।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ভবিষ্যতে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের কর্মকর্তারা ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সম্ভাব্য ক্ষতি প্রশমনে কার্যকর সরকারি কর্মসূচি গ্রহণ করতে সক্ষম হবেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কর্মশালায় প্রশিক্ষণার্থীদের ফসলের ক্ষয়ক্ষতি শনাক্তকরণের জন্য ভৌগোলিক তথ্য সিস্টেম (জিআইএস) এবং রিমোট সেন্সিং বিশ্লেষণের ওপর চার দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরপর মোবাইল ডিভাইস ব্যবহার করে গ্রাউন্ড ডেটা সংগ্রহের পদ্ধতি শিখতে সিলেটে তিন দিনের মাঠ পর্যায়ের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
প্রশিক্ষণ কর্মসূচি শেষে এডিবি ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেট অঞ্চলে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে যৌথ প্রতিবেদন তৈরি করবে। এ ছাড়াও, গোপালগঞ্জ এলাকায় এডিবির সহায়তায় সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের মূল্যায়ন সমীক্ষা পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার বিভাগ দেশব্যাপী ছোট আকারে জলবায়ু দুর্যোগ নিরূপণ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে করবে।
প্রশিক্ষণটি পরিচালনা করছেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রপস রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর দ্য সেমি-অ্যারিড ট্রপিকসের (আইসিআরআইএসএটি) বিশেষজ্ঞরা।
সমৃদ্ধ ও সহনশীল এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গড়তে জাপান সরকারের অর্থায়নে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক জাপান ফান্ড থেকে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির জন্য তহবিল দিচ্ছে।