ঢাকা | বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ |
৩০ °সে
|
বাংলা কনভার্টার
walton

ই–কমার্স প্রতারনাঃ এখনো গ্রাহকের পাওনা ৩০৪ কোটি টাকা

ই–কমার্স প্রতারনাঃ এখনো গ্রাহকের পাওনা ৩০৪ কোটি টাকা
এখনো গ্রাহকের পাওনা ৩০৪ কোটি টাকা

প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে সব গ্রাহক এখনো টাকা ফেরত পাননি। ২৭টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের কাছে গ্রাহকদের মোট অর্থ আটকে ছিল ৫২৫ কোটি টাকা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-ক্যাবের যৌথ প্রচেষ্টায় এরই মধ্যে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত ২২১ কোটি ২৮ লাখ ৯৩ হাজার ৩৬২ টাকা ফেরত দিয়েছে ১৩টি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ৩০ জুনের পরে ই-কমার্স লেনদেন পরিশোধকারী প্রতিষ্ঠানে (পেমেন্ট গেটওয়ে) আটকে থাকা টাকা থেকে এই অর্থ ফেরত দেয়া হয়েছে। নিজেদের টাকা ফেরত পাওয়া গ্রাহকের সংখ্যা ২৩ হাজার ৫৬৫।

অবশ্য এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এখনো গ্রাহকের পাওনা রয়েছে ৩০৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ মোট পাওনার অর্ধেক টাকাও ফেরত পায়নি ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা। এই টাকা গ্রাহকেরা কবে ফেরত পাবেন তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না। তবে পুরো বিষয়টি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে বলে গ্রাহকেরা আস্তে আস্তে টাকা ফেরত পাবেন বলে আশাবাদী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের মাধ্যমে পরিশোধ করা বকেয়া অর্থের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৬৬ কোটি ৪৩ লাখ ৬৭ হাজার ৬৯৩ টাকা একাই দিয়েছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম। টাকা নিয়ে পণ্য দেয়নি, টাকাও ফেরত দেয়নি, এমন ২০ হাজার ৫৩টি লেনদেনের বিপরী ১৯ হাজার ৪৩৯ জন গ্রাহককে এই অর্থ ফেরত দেওয়া হয়েছে। ফস্টার করপোরেশন লিমিটেডের পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা ই-কমার্স গ্রাহকদের এই অর্থ ফেরত দিয়েছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটি ।

পরিশোধে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা আলেশা মার্ট ৩ হাজার ৮৪১টি লেনদেনের বিপরীতে ২ হাজার ২৩৬ জন গ্রাহককে ফেরত দিয়েছে ৩৯ কোটি ৫৭ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। আর তৃতীয় অবস্থানে থাকা দালাল প্লাস ফেরত দিয়েছে ১২ কোটি ২৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮৮৯ টাকা।

সূত্রমতে, বাংলাদেশে পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ফস্টার পেমেন্ট সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়ে ও সর্বোচ্চ কমপ্লায়েন্স বজায় রেখে গ্রাহকের টাকা নিয়মমাফিক সংশ্লিষ্ট বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে সংরক্ষণ ও ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। এযাবৎকালে সবচেয়ে বেশি গ্রাহকের টাকা একমাত্র ফস্টার পেমেন্টের কাছেই সংরক্ষিত আছে বলে জানা গেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেল) মো. সাঈদ আলী টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘সব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক যাতে তাদের টাকা ফেরত পান সে ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। বাকি টাকা ফেরত দেওয়া প্রক্রিয়াধীন আছে। ধাপে ধাপে অন্য গ্রাহকদের পাওনা অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে। ’

প্রসঙ্গত, মোট ২৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩টি প্রতিষ্ঠান কিছু গ্রাহকের টাকা ফেরত দিলেও বাকি ১৪টি ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেনি। এগুলো হচ্ছে ইভ্যালি, সিরাজগঞ্জ শপ, নিডস, টোয়েন্টিফোর টিকেটি, ই–অরেঞ্জ, উইকুম, আকাশ নীল, প্রিয় শপ, আলাদিনের প্রদীপ, আমার বাজার, আস্থার প্রতীক, বাড়ির দোকান ডট কম, নিরাপদ ও ইনফিনিটি মার্কেটিং লিমিটেড।

মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও নগদ এবং পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান সফটওয়্যার শপ লিমিটেড (এসএসএল), ফস্টার করপোরেশন লিমিটেড ও সূর্যমুখী লিমিটেডের সঙ্গে ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর চুক্তি ছিল। তবে ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো পেমেন্ট গেটওয়ে হিসেবে বেশি বেছে নিয়েছিল নগদ ও এসএসএলকে। যদিও এক কিউকমের কারণেই ৩৮১ কোটি ১২ লাখ টাকা আটকে ছিল ফস্টার করপোরেশনে। আর নগদে ২০ কোটি ৬৯ লাখ এবং এসএসএলে ৮৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা আটকে ছিল। এ ছাড়া সূর্যমুখী লিমিটেডে ২৬ কোটি ২১ লাখ এবং বিকাশে ৪ কোটি ৯২ লাখ টাকা আটকে ছিল।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকা অনুযায়ী, ইভ্যালির গ্রাহকদের টাকা বিকাশ, নগদ ও এসএসএলে আটকে আছে ২৫ কোটি ৮৫ লাখ। এসএসএলে ই অরেঞ্জের গ্রাহকদের আছে ৩৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।

৩০৪ কোটি টাকা,ই–কমার্স,প্রতারণা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Transcend