ভারতের ফিউচার গ্রুপে দুই বছর আগে একটি বিনিয়োগ অনুমোদনের জন্য অ্যামাজন ডটকম ইনকরপোরেশন ‘তথ্য গোপন করে ভুয়া কাগজপত্র’ জমা দিয়েছিল বলে অভিযোগ করেছে ভারতের এন্টিট্রাস্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা- সিসিই।
এ ব্যাপারে একটি উকিল নোটিস পাঠানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ই-কমার্স জায়ান্টের কাছে। রয়টার্স জানিয়েছে, অ্যামাজনের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা ওই চিঠি তারা দেখেছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানির মালিকানাধীন রিলায়েন্স গ্রুপের কাছে রিটেইল ব্যবসা বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়ে ফিউচার গ্রুপের সঙ্গে অ্যামজনের তিক্ত আইনি লড়াইকে ওই চিঠি আরও জটিল করে তুলেছে। সেই আইনি লড়াই ভারতের সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে।
অ্যামাজনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ফিউচার গ্রুপের গিফট ভাউচার ইউনিটের ৪৯ শতাংশ ১৯ কোটি ২০ লাখ ডলারে কেনার জন্য ২০১৯ সালে চুক্তিতে রাজি হয় দুই পক্ষ। ওই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ফিউচার গ্রুপ তার আরেকটি কোম্পানি ফিউচার রিটেইল লিমিটেডকে ভারতের অন্যতম বড় ব্যবসায়িক গ্রুপ রিয়ালেন্সের কাছে বিক্রি করতে পারে না।
এখন ফিউচার গ্রুপের একটি অভিযোগের ভিত্তিতে নথিপত্র পর্যালোচনা করে অ্যামাজনের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ এনেছে কমপিটিশন কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (সিসিআই)
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিসিআই থেকে ৪ জুনের তারিখে অ্যামাজনের কাছে পাঠানো চিঠিতে ওই বলা হয়, তারা ফিউচার গ্রুপের সঙ্গে লেনদেনে তাদের কৌশলগত স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়টি প্রকাশ না করে প্রকৃত পরিস্থিতি গোপন করেছে।
‘ভুয়া’ তথ্য দেওয়ার কারণে কেন অ্যামাজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জরিমানা করা হবে না- তার কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে সিসিআইয়ের ওই চার পৃষ্ঠার চিঠিতে। তবে অ্যামাজন এখনও এই চিঠির জবাব দেয়নি।
রয়টার্সকে পাঠানো এক বিবৃতিতে অ্যামাজনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা একটি চিঠি পেয়েছে এবং ভারতের আইন মেনে চলতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, সিসিআইকে তারা পূর্ণ সহযোগিতা করবে।
রয়টার্সের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সিসিআই ও ফিউচার গ্রুপের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করেনি বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে সিসিআই যথেষ্ঠ ক্ষমতা রাখে। অভিযোগ প্রমাণ হলে তারা অ্যামাজনকে জরিমানা করতে পারে, এমনকি ভারতে তাদের ব্যবসার অনুমতিও বাতিল করতে পারে বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রতিযোগিতামূলক আইন বিশেষজ্ঞ বৈভব চৌকস।
এদিকে চিঠি পাঠানো নিয়ে রয়টার্সের সংবাদ প্রকাশের পর ফিউচার গ্রুপের শেয়ারের দর বেড়ে গেছে।
ভারতে রিটেইল ব্যবসার সবচেয়ে বড় কোম্পানি ফিউচার গ্রুপ দেড় হাজারের বেশি সুপারমার্কেট এবং অন্যান্য দোকান পরিচালনা করে।
বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশটির এই রিটেইল ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ পেতে বিশ্বের অন্যতম দুই ধনী জেফ বেজোস ও মুকেশ আম্বানির লড়াই চলছে।