ই-কমার্স খাত নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে অস্থিরতাকে কেন্দ্র করে এই খাত নিয়ে ইতিবাচক বার্তা দেয়ার লক্ষ্যে সচেতনতামুলক প্রচারণা কর্মসূচী হাতে নিয়েছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। মঙ্গলবার ২০টি ই-কমার্স অনলাইন প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় রাজধানীর একটি হোটেলে "জেনে-বুঝে-শুনে, শপিং হবে অনলাইনে’’ স্লোগান নিয়ে সচেতনতামুলক প্রচারণা কর্মসূচীর উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আয়োজকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের ই-কমার্স খাত মানুষের সেবা দিয়ে আস্থা অর্জন করেছে বলে ক্রেতারা এই সেবা নিচ্ছে। করোনার শুরু থেকে গত দেড় বছরে গৃহে থাকা মানুষদের নিরাপদ সেবা দিয়ে এই খাতকে বিকশিত করেছে এই খাতের উদ্যোক্তারা। কিন্তু হাতে গোনা কতিপয় ব্যক্তির মন্দ ব্যবসায়িক কৌশল এর জন্য এই সেবাখাত ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে না এবং অন্যান্য বেশীরভাগ ইতিবাচক ও আস্থাশীল প্রতিষ্ঠানগুলোতে তার প্রভাব পড়তে পারে না।
ই-কমার্স কোনো প্রতারণা ব্যবসা নয় এবং কোনো ব্যবসায় পণ্য ক্রয়ের মাধ্যমে সে ব্যবসায় বিনিয়োগ করা যায় না এবং অস্বাভাবিক সময় নিয়ে অযাচিত মূল্যছাড় দিয়ে কোনো দীর্ঘস্থায়ী ব্যবসায়িক ধারণা প্রতিষ্ঠা করা যায়না। আর তাই ক্রেতাদেরকে সঠিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে জেনে শুনে বুঝে সঠিক পদ্ধতিতে পণ্য ক্রয় করতে হবে। মূলত এসব বার্তা দেয়ার জন্যই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সার বলেন, আমরা প্রকৃত ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের সামনে নিয়ে আসতে চাই এবং মন্দ ব্যবসায়িক কৌশল প্রয়োগের পথ খোলা রাখতে চাইনা। এ ব্যাপারে বেশ কিছু বিষয়ে ই-ক্যাব সরকারের সাথে কাজ করছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে। অভিযুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে নজরদারীতে রাখা হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরের জবাবে ই-ক্যাবের জেনারেল সেক্রেটারী আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, আমরা একটি সমন্বিত অভিযোগ ব্যবস্থাপনা সেবা চালু করার চেষ্টা করছি। এতে এটুআই সহযোগিতা করছে এর সাথে ক্রেতা ভোক্তা ও সরকারী এজেন্সিগুলো সম্পৃক্ত হয়ে গেলে সমস্যা অনেকাংশে কমে যাবে।
তিনি আরো বলেন, এসক্রো সেবা মুলত একটি প্রযুক্তি নির্ভর ও স্বয়ংক্রিয়া পদ্ধতি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা টাকার ব্যাপারে ই-ক্যাব থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে দ্বিপাক্ষিক সভায় সমস্যা ও উদ্বেগের কথা জানানো হয়েছে।
আজকের ডিল ও বিডিজবসের সিইও ফাহিম মাশরুর অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করতে গয়ে সাংবাদিকদের ভূমিকার জন্য তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের জন্য সকলের বদনাম হতে পারে না। বেশীরভাগ প্রতিষ্ঠান ভাল সেবা দিচ্ছে এবং এই কারণে এই বিকশিত হচ্ছে। সেবা না পেলে ভোক্তারা এখানে আসতো না। তাই যারা সঠিক সেবা দিচ্ছে তাদের বিষয়টি ক্রেতা সাধারণকে জানানো উচিত।
অনুষ্ঠানে কথা বলেন. চালডাল এর ফাউন্ডার ও সিওও জিয়া আশরাফ বলেন, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান গ্রাহককে পণ্য সেবা দিয়ে থাকে, গ্রাহকেরা এখানে অর্থের বিনিময়ে সেবা নিয়ে থাকেন। কোনো ক্রেতার স্বার্থ সুরক্ষা না হলে অবশ্যই অভিযোগ করা কিংবা আইনের আশ্রয় নেয়ার অধিকার তার রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, কোনো কোম্পানীতে বিনিয়োগ করতে সে কোম্পানীর কাগজপত্র দেখে দ্বিপাক্ষিক শর্ত ও আলোচনার ভিত্তিতে বিনিয়োগ করতে হয়। একজন বিনিয়োগকারী যেমন লাভ পাবেন তেমনি কোম্পানী লোকসান দিলেও তার দায় নিবেন। পণ্য ক্রয় করা কখনো বিনিয়োগ হতে পারে না।
অনুষ্ঠানে কথা বলেন, আদি এর উদ্যোক্তা ফাতেমা আক্তার, পাঠাও প্রেসিডেন্ট ফাহিম আহমেদ, একশপ প্রধান রেজওয়ানুল হক জামি, পিকাবু সিইও মরিন তালুকদার ও যাচাই এর সিইও মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ।
গত ১০ অক্টোবর দেশীয় ২০ টি প্রতিষ্ঠান প্রতিবছরের ন্যায় এবারো ‘‘টেন-টেন’’ শপিং উৎসব ঘোষণা করেছে। ২০ দিন ব্যাপী এই আয়োজনে প্রতিটি কোম্পানি নানা ধরনের গিফট, ডিসকাউন্ট, অফার ছাড়াও দিচ্ছে সারাদেশে ফ্রি ডেলিভারি I বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করলে থাকছে ১০% ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক।