ঢাকা | শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ |
২২ °সে
|
বাংলা কনভার্টার
walton

ভারতে কারখানা খুলতে হবে ডেল, এসার, অ্যাপল, লেনোভো এবং এইচপির মতো সংস্থাগুলোকে

ল্যাপটপ-ট্যাবলেট আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিল ভারত

ল্যাপটপ-ট্যাবলেট আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিল ভারত
ল্যাপটপ-ট্যাবলেট আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিল ভারত

আত্মনির্ভরতার পথে হাঁটছে ভারত। দেশীয় প্রযুক্তির ব্য়বহার বাড়াতে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ও ব্যক্তিগত কম্পিউটার আমদানির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিনা লাইসেন্সে বিদেশ থেকে আর আমদানি করা যাবে না ট্যাবলেট-ল্যাপটপ। চলতি সপ্তাহেই এই ঘোষণা করেছিল ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেড। সেই সময় জানানো হয়েছিল, অবিলম্বে এই নিয়ম কার্যকর হবে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এইচএসএন ৮৭৪১-এর আওতায় সমস্ত ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, অল ইন ওয়ান পার্সোনাল কম্পিউটার এবং আল্ট্রা স্মল কম্পিউটার আমদানি বন্ধ করা হল। তবে শুক্রবার কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই নিয়ম কার্যকরের সময় কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া হল। আগামী ১ নভেম্বর অবধি এই মেয়াদ বাড়ানো হল।

চলতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল বিদেশ থেকে ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ও ব্যক্তিগত কম্পিউটার আমদানির জন্য এবার থেকে লাইসেন্সের প্রয়োজন পড়বে। অবিলম্বেই এই নিয়ম কার্যকর হবে।

দেশীয় সংস্থাগুলির উৎপাদিত পণ্য যাতে বাজারে বিক্রি হতে পারে তার জন্যই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রনালয় এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। একই সঙ্গে লক্ষ্য ছিল চিনকে ধাক্কা দেওয়া। কেননা ভারতের বুকে ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, অল ইন ওয়ান পার্সোনাল কম্পিউটার সব থেকে বেশি আসছিল চিন থেকে। একই সঙ্গে ওইসব পণ্য সস্তা হওয়ায় দেশে উৎপাদিত পণ্য বাজার ধরতে পারছিল না। কিন্তু সেই সিদ্ধান্তের বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায় নানা মহলে। তরুণ প্রজন্মের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প সংস্থাগুলি এবং ল্যাপটপ, ট্যাবলেট কম্পিউটারের ওপর নির্ভরশীল প্রায় সব বেসরকারি সংস্থা এবং আমজনতা কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানান। একাধিক ব্যবসায়ীরা কেন্দ্রের এই নিয়মে আপত্তি জানাতেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে নিয়ম কার্যকর করার সময়সীমা বাড়ানো হল। নতুন নিয়মের সঙ্গে যাতে ব্যবসায়ী-স্টেকহোল্ডাররা খাপ খাইয়ে নিতে পারেন, তার জন্য এই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

ডেল, এসার, স্যামসাং, প্যানাসনিক, অ্যাপল, লেনোভো এবং এইচপির মতো সংস্থাগুলো এখন থেকে আর বিদেশে নিজেদের কারখানায় তৈরি ল্যাপটপ, কম্পিউটার বাজারজাত করতে পারবেন না। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের ফলে ভারতে হয় কারখানা খুলতে হবে, অন্যথায় ভারতীয় কোনো সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্বে যেতে হবে। দুই রাস্তায় না হাঁটলে দেশ থেকে ব্যবসা গোটাতে হবে। একই সঙ্গে অভিযোগ ওঠে প্রধানমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ মুকেশ আম্বানির জিও যেহেতু বাজারে ল্যাপটপ, ট্যাবলেট আনছে তাই তাঁদের দেশের বাজার ধরিয়ে দিতেই কেন্দ্র সরকার এই পদক্ষেপ করছে। ঠিক যেভাবে জিও টেলিকম-কে বাজার দখলের জন্য ভোডাফোন-কে দেশের মাঠে কোনঠাসা করে দেওয়া হয়েছিল, ঠিক সেভাবেই এখন ডেল, এসার, স্যামসাং, প্যানাসনিক, অ্যাপল, লেনোভো এবং এইচপির মতো ভারতে ব্যবসা করা বহুজাতিক সংস্থাগুলিকে কোনঠাসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কার্যত সেই অভিযোগের পরে পরে নড়চড়ে বসতে বাধ্য হয় মোদি সরকার।

শুক্রবার বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রনালয়ের পক্ষে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে আমদানির কনসাইনমেন্টগুলিকে শেষ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে বিনা লাইসেন্সে আমদানি করা যাবে। ১ নভেম্বর থেকে ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, ব্যক্তিগত কম্পিউটার আমদানির জন্য লাইসেন্স লাগবে।

তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর জানান, ব্যবসায়ীদের যাতে ল্যাপটপ, ট্যাবলেট আমদানির নতুন নিয়মের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে কিছুটা সময় লাগবে। নতুন নিয়মগুলি কার্যকর করার জন্যও সময় লাগবে। শীঘ্রই এই বিষয়ে নোটিস জারি করা হবে।

ল্যাপটপ-ট্যাবলেট আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা,ভারত
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Transcend