ঢাকা | শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ |
১৮ °সে
|
বাংলা কনভার্টার
walton

ফোনের ব্যাটারি নষ্ট করছে ফেসবুক, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ প্রাক্তন কর্মীর

ফোনের ব্যাটারি নষ্ট করছে ফেসবুক, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ প্রাক্তন কর্মীর
ফোনের ব্যাটারি নষ্ট করছে ফেসবুক, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ প্রাক্তন কর্মীর

স্মার্টফোন হয়তো সেভাবে ব্যবহার করাই হল না, অথচ দিনের শেষে দেখা গেল যে চার্জ অনেকটাই শেষ হয়ে গেছে – এমন ঘটনা কমবেশি আমাদের সকলের সঙ্গেই প্রায়শই ঘটে থাকে। কিন্তু এর পিছনে ঠিক কারণ কী? আসলে ব্যাপারটা হল, আমাদের স্মার্টফোনে থাকা অ্যাপগুলিই গোপনে শেষ করে দেয় ব্যাটারির চার্জ। এমনকি ব্যবহার না করা হলেও কিছু অ্যাপ চুপিসারে ব্যাটারি খরচ করা চালিয়ে যেতে থাকে। সেক্ষেত্রে চলতি সময়ে যে সকল অ্যাপ স্মার্টফোনে থাকা এককথায় বাধ্যতামূলক বললেই চলে, তাদের মধ্যে ফেসবুক হল অন্যতম। আর সম্প্রতি সংস্থার এক প্রাক্তন কর্মী জানিয়েছেন যে, ফেসবুক অ্যাপটি গোপনে ব্যবহারকারীদের সেলফোনের ব্যাটারি খরচ করে।

গোপনে স্মার্টফোনের ব্যাটারি ক্ষয় করছে ফেসবুক অ্যাপ, দাবি সংস্থার প্রাক্তন কর্মীর

উল্লেখ্য যে, ফেসবুক বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। তবে জনপ্রিয়তার পাশাপাশি সংস্থাটির নামের সঙ্গে একাধিক বিতর্কও জড়িয়ে রয়েছে। প্রাইভেসি রিস্ক হোক বা টার্গেটেড বিজ্ঞাপন, বিভিন্ন কারণে একাধিকবার কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে মেটা মালিকানাধীন এই সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্টটিকে। আবার, এখন সংস্থারই এক প্রাক্তন কর্মী দাবি করেছেন যে, ইউজারদের স্মার্টফোনে এই অ্যাপ থাকলে ফোনের ব্যাটারি খুব দ্রুত খরচ হয়। সবচেয়ে বড়ো কথা হল, এর পিছনেও নাকি কোম্পানিটির হাতযশ রয়েছে। ফলে বিতর্ক যে সংস্থাটির পিছু ছাড়ছে না, সেকথা বলাই বাহুল্য।

নেগেটিভ টেস্টিং করছে ফেসবুক, আর সেজন্যেই ঘটছে যত বিপত্তি

নিউ ইয়র্ক পোস্ট -এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উক্ত চাঞ্চল্যকর খবরটি প্রকাশ্যে আনয়নকারী ফেসবুকের প্রাক্তন কর্মীটি হলেন ৩৩ বছর বয়সী জর্জ হেওয়ার্ড । তিনি এর আগে ফেসবুক মেসেঞ্জার অ্যাপে ডেটা সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন। উল্লেখ্য যে, জর্জ নেগেটিভ টেস্টিং নামক একটি চাঞ্চল্যকর অনুশীলনের সন্ধান পেয়েছেন, যার মাধ্যমে টেক কোম্পানিগুলি গোপনে সেলফোনের ব্যাটারির একটি বড়ো অংশ রানিং ফিচারের নামে ব্যয় করে বলে জানা গিয়েছে।

ফেসবুকের প্রাক্তন এই কর্মীর দাবি অনুযায়ী, নেগেটিভ টেস্টিং ফিচারের কথা জানতে পারা মাত্রই সংস্থার ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। তবে জবাবে ম্যানেজার তাকে জানান যে, এই অনুশীলনের ফলে কিছু লোকের ক্ষতি হলেও বিপুল সংখ্যক মানুষকে সাহায্য করা যাবে। সেক্ষেত্রে ম্যানেজারের সঙ্গে জর্জের মতের মিল না হওয়ায় তিনি সংস্থার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। জর্জের দাবি অনুযায়ী, তিনি এই অবৈধ নেগেটিভ টেস্টিংয়ের প্র্যাকটিস করতে অস্বীকার করেছিলেন, যে কারণে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ফেসবুক অ্যাপে যোগ দেন হেওয়ার্ড। তার কথায়, এই প্র্যাকটিসের কারণে কতজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। তবে তিনি নিশ্চিতভাবে দাবি করেছেন যে, ফেসবুক নেগেটিভ টেস্টিং করছে, যা একেবারেই অবৈধ। তিনি আরও বলেছেন যে, সফলভাবে এই টেস্টিং করার জন্য তাকে ‘How to run thoughtful negative tests’ শিরোনামের একটি ইন্টারনাল ট্রেনিং ডকুমেন্ট দেওয়া হয়েছিল। ফলে কোম্পানি যে এই ধরনের প্র্যাকটিসের আয়োজন করেছে, তার সুনিশ্চিত জ্বলন্ত প্রমাণ হল এই ডকুমেন্ট৷ জর্জ তার বিবৃতিতে একথাও যোগ করেছেন যে, তিনি তার কর্মজীবনে এর চেয়ে ভয়ঙ্কর ডকুমেন্ট আগে কখনও দেখেননি।

পূর্বেও ফেসবুক-এর বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ এসেছে

উল্লেখ্য, ফেসবুকের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই গোপনে ফোনের ব্যাটারি ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৫ সাল থেকেই ইউজারদের কাছ থেকে একাধিকবার এই অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে যে, আইওএস ভার্সনে ফেসবুক অ্যাপটি খোলা না থাকলেও ফোনের ব্যাটারি বিপুল পরিমাণে খরচ হচ্ছে। আবার, ফেসবুকের প্রভাবে সত্যি সত্যিই ফোনের ব্যাটারি দ্রুত শেষ হয় কি না, তা চেক করে দেখার জন্য ২০১৬ সালে অ্যান্ড্রয়েড ব্লগার রাসেল হলি -র থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে রেডিট ব্যবহারকারী pbrandes_eth একটি এলজি জি৪ অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে কয়েকটি টেস্ট করেন। টেস্টের ফলাফল দেখে নিশ্চিতভাবে তিনি জানান যে, ফোনে ফেসবুক ও মেসেঞ্জার ইন্সটল করা না থাকলে ফোনের অন্য অ্যাপগুলি ১৫ শতাংশ দ্রুতগতিতে খুলছিল। কিন্তু যে মুহূর্তে ফোনে ফেসবুক এসে উপস্থিত হল, ঠিক তখনই অন্যান্য অ্যাপগুলির ফাংশনালিটি কমে গেল।

অর্থাৎ মোদ্দা কথা হল, স্মার্টফোনে ফেসবুক বিদ্যমান থাকলে যে ডিভাইস বেশ খানিকটা প্রভাবিত হচ্ছে, সেকথা সুনিশ্চিতভাবে দাবি করছেন অনেকেই। উল্লেখ্য যে, কোন অ্যাপগুলি সবচেয়ে বেশি ব্যাটারি ক্ষয় করে, তা নিয়ে বহু সংস্থাই প্রায়শই একাধিক সমীক্ষা চালিয়ে থাকে, এবং সবকটিতেই তালিকার প্রথমের দিকেই ফেসবুক-এর দেখা মেলে৷ সেক্ষেত্রে এখন বাস্তবিকভাবে সংস্থাটি আগামী দিনে ইউজারদের স্মার্টফোনের ব্যাটারির দ্রুত ক্ষয়জনিত সমস্যার কোনো সুরাহা করবে কি না, সেটা একমাত্র সময়ই বলতে পারবে।

ফোনের ব্যাটারি নষ্ট,ফেসবুক
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Transcend