ঢাকা | শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ |
৩১ °সে
|
বাংলা কনভার্টার
walton

রবির লভ্যাংশ না দেওয়ার ‘কারণ’ ২% টার্নওভার কর

রবির লভ্যাংশ না দেওয়ার ‘কারণ’ ২% টার্নওভার কর
মহামারী বছরেও রবির রাজস্ব বৃদ্ধি

রবির কর্মকর্তাদের দাবি, ন্যূনতম টার্নওভার কর প্রত্যাহার না হওয়ায় ২০২০ সালে কোম্পানির কার্যকর করভার বেড়ে ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ হয়েছে, যার ফলে তাদের প্রকৃত নিট মুনাফার পরিমাণ অনেক কমেছে।

তারপরও নীতিমালা অনুযায়ী লভ্যাংশ দিলে তা হতো ‘স্বল্প’, বাজারে যার ‘ইতিবাচক প্রভাব না’ পড়বে না বলে উদ্বেগ ছিল। তাই ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি বিবেচনায় লভ্যাংশ না দিয়ে মুনাফা পুনঃবিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সোমবার রবির ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণীর যে সংক্ষিপ্তসার প্রকাশ করা হয়ে, তাতে কোনো লভ্যাংশ প্রস্তাব করা হয়নি।

অথচ রবি আগের বছরের তুলনায় শেয়ারপ্রতি ৭০০ শতাংশের বেশি মুনাফা করেছে। রবির এমন সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে বিস্ময় সৃষ্টি করে।

এর ব্যাখ্যা জানতে দেশে রবি আজিয়াটার কর্মকর্তাদের মঙ্গলবার দুপুরে ডেকেছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তবে তাতে সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

মঙ্গলবার ২০২০ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের প্রতিবেদন নিয়ে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আসেন রবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহতাব উদ্দিন আহমেদ।

লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণ জানতে চাইলেও তিনি বিস্তারিত কার্যকারণ ব্যাখ্যা না করে বলেন, “আমাদের যে ডিভিডেন্ট পলিসি আছে যদি ডিভিডেন্ট দেই এত ইনসিগনিফেকেন্ট পারসেনটেজ হবে, এটি দিয়ে কোনো পজিটিভ ইম্প্যাক্ট ফেলা যেত কিনা, দ্যাট ওয়াজ ওয়ান অব দ্য ক্রিটিকাল কনসার্ন।

“সেকেন্ড বিষয়টি ছিল আমাদের এই ডিভিডেন্টগুলো যদি টাকাটা যদি রি-ইনভেস্ট করি তাহলে ফিউচার গ্রোথে কাজে লাগবে। আরও অনেক কিছু কনসিডার করা হয়েছে।”

পরে রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের কাছে লভ্যাংশ না দেওয়ার পক্ষে রবির হিসাব-নিকাশসহ যুক্তি তুলে ধরেন।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে আসার পূর্বশর্ত হিসেবে ২ শতাংশ ন্যূনতম টার্নওভার কর প্রত্যাহারে ‘সরকার আশ্বাস দিয়েও’ তা কার্যকর না করায় তালিকাভুক্ত টেলিকম অপারেটরদের ওপর প্রযোজ্য ‘৪০ শতাংশ করপোরেট করহারের সুফল থেকে রবি’ বঞ্চিত হচ্ছে। এর ফলে ২০২০ সালে রবির কার্যকর করের হার দাঁড়িয়েছে ৭১ দশমিক ৮ শতাংশ।

“ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা এবং সার্বিক ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি বিবেচনায় রবির পরিচালনা পর্ষদ ২০২০ সালের জন্য কোনো ধরনের লভ্যাংশ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

সাহেদ বলেন, অনেক প্রতিকুলতার ২০২০ সালে রবি ব্যবসায়িকভাবে ভালো করেছে। কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইসিএস) ৮ গুণের বেশি বেড়ে ৪ পয়সা থেকে ৩৩ পয়সা হয়েছে।

“আমাদের রাজস্ব আয়ের ওপর প্রযোজ্য ২% মিনিমাম করপোরেট ট্যাক্স প্রত্যাহার হলে এই ইপিএস খুব সহজেই বৃদ্ধি পেয়ে ৬৪ পয়সা হতে পারতো।”

ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে রবি আজিয়াটার শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৩৩ পয়সা, যা আগের বছর ছিল মাত্র ৪ পয়সা। সে হিসেবে ইপিএস বেড়েছে ৭২৫ শতাংশ।

৩৩ পয়সা ইপিএস ধরে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সোমবারের বাজার দরের ভিত্তিতে রবির পিই রেশিও (মুনাফা অনুপাতে দাম) হয়েছে ১৩৯ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট, যেখানে গ্রামীণফোনের পিই রেশিও মাত্র ১৪ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট।

এদিকে রবি লভ্যাংশ না দেওয়ার ঘোষণার পর মঙ্গলবার ঢাকার শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুতে রবির শেয়ারের দাম আগের দিনের ৪৬ টাকা থেকে নেমে আসে ৩৯ টাকায়। এতে বাজারের সার্বিক সূচকেও পতন হয়।

এ দরপতনে রবির সুনামে কোনো প্রভাবে ফেলবে কিনা জানতে চাইলে সিইও বলেন, “সবাইকে বুঝতে হবে ডিভিডেন্ট ইজ ইমপর্টেন্ট বাট ডিভিডেন্ট ইজ নট অনলি ফ্যাক্টর অন ইভালুয়েটিং কোম্পানি পারফরমেন্স। আমরা সব জায়গায় ভাল করছি- এসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে।

“আমি অনুরোধ করব শুধু ডিভিডেন্টের দিকে তাকালে মিসলিডিং হবে, আমরা শেয়ার মার্কেট কন্ট্রোল করতে পারব না। আমরা নিশ্চিত করতে চাই, আমাদের অগ্রগতিতে যে লাভটা আসবে তা শেয়ারহোল্ডারদের সাথে ডিস্ট্রিবিউট করব।”

মহামারী বছরেও রবির রাজস্ব বৃদ্ধি

কোভিড-১৯ মহামারীকালে ২০২০ সালে অপারেটর রবির রাজস্ব বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ১ শতাংশ। চতুর্থ প্রান্তিকে ১ হাজার ৯২০ কোটি টাকাসহ এ বছর রবির মোট আয় ৭ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা।

এক সংবাদ সম্মেলনে রবি জানায়, এই প্রান্তিকের ৩৯ কোটি টাকাসহ ২০২০ সালে রবির করপরবর্তী মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৫ কোটি টাকায়। আগের বছরের নামমাত্র মুনাফার পর এ অর্জন আশাব্যঞ্জক।

রবি
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Transcend
Vention