‘ নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের মালিকানার প্রায় পুরোটাই বিদেশি কোম্পানির। কারণ, আমরা বৈদেশিক বিনিয়োগ আশা করছি।১০ শতাংশের বেশি শেয়ার রাখার বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংকে গেছে বলে আমরা শুনেছি। এখন এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন জারির কথা।’বললেন নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর আহমেদ।
আগামী জুলাইয়ের মধ্যে নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু করা হবে বলে জানান তানভীর আহমেদ।
একক কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কোনো ব্যাংকের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ারের মালিক হতে পারবে না—ব্যাংক কোম্পানি আইনে এমন বিধান রয়েছে। তবে কার্যক্রম শুরুর অপেক্ষায় থাকা নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পিএলসি এ ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় পাচ্ছে। নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের মালিকানায় রয়েছে সাত উদ্যোক্তা। তাদের মধ্যে ছয়টি কোম্পানি ও একজন ব্যক্তি উদ্যোক্তা। এই সাত উদ্যোক্তার মধ্যে তিন প্রতিষ্ঠানেরই আছে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার। কিন্তু সরকার বলছে, ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ না করার আইনি নিষেধাজ্ঞা তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। অর্থাৎ ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের একক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ধারণ করতে পারবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ২৭ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়ে এ ব্যাপারে সরকারের সম্মতি জানিয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ বলেছে, ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৪ (ক) (১) ধারার বিধান পরিপালন থেকে নগদ ডিজিটাল ব্যাংককে অব্যাহতি দেওয়া হলো। ওই ধারায় শেয়ার ধারণ সম্পর্কে বলা আছে।
সংঘ স্মারক (এমওএ) অনুযায়ী, নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের (ফেসভ্যালু) মোট ১২ কোটি ৫০ লাখ শেয়ার রয়েছে। কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১২৫ কোটি টাকা।
নগদ ডিজিটাল ব্যাংকের সাত উদ্যোক্তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওসিরিস ক্যাপিটাল পার্টনার্স এলএলসি ও ব্লু হ্যাভেন ভেঞ্চারস এলএলসি ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক ফিনক্লুশন ভেঞ্চারস প্রাইভেট লিমিটেডের হাতে রয়েছে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার। ১২৫ কোটি টাকা মূলধনের মধ্যে ১০৭ কোটি ২৫ লাখ টাকাই এই তিন কোম্পানির অর্থায়ন।
বাকি চার উদ্যোক্তার মধ্যে জেন ফিনটেক এলএলসির ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা, ট্রু-পে টেকনোলজিস এলএলসির ৪ কোটি টাকা ও ব্যক্তি উদ্যোক্তার কাছে রয়েছে ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার। আর একমাত্র দেশি কোম্পানি ফিনটেকচুয়াল হোল্ডিংসের হাতে রয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার।
ছাড়ের বিষয়ে জানতে চাইলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ কথা বলতে রাজি হননি। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘যে ছাড়টা নগদ ডিজিটাল ব্যাংক পেয়েছে, তা পাওয়ার এখতিয়ার আছে। এমনকি অন্য ডিজিটাল ব্যাংকও একই ধরনের ছাড় পাওয়ার অধিকার রাখে। এ ছাড়া ব্যাংক কোম্পানি আইন সরকারকে এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে।’
ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১২১ ধারায় বলা আছে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঘোষণা করতে পারে যে এ আইনের সব বা কোনো বিশেষ বিধান, কোনো নির্দিষ্ট ব্যাংক–কোম্পানি বা সব ব্যাংক কোম্পানির ক্ষেত্রে, সাধারণভাবে বা প্রজ্ঞাপনে নির্ধারিত কোনো মেয়াদ কালে প্রযোজ্য হবে না।’