গত বছরের পুরোটা জুড়েই ছিল কভিড-১৯-এর প্রভাব। তা থেকে খুব একটা করোনাভাইরাস মহামারীপূর্ব অবস্থায় ফিরে আসতে পারেনি বিশ্ব। এক বছর আগেও বিশ্বে যে পরিমাণ হ্যান্ডসেট উৎপাদন হতো ২০২১ সালে হয়েছে ঠিক একই পরিমাণ। যদিও হুট করে চাহিদা কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় কোনো কোনো অঞ্চলে উৎপাদন কিছুটা বেড়েছে। তবে এত সংকটের মধ্যেও ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী সেলফোন উৎপাদনের ৬৭ শতাংশই করেছে চীন। খবর কাউন্টারপয়েন্ট।
কারণ হুয়াওয়ের উৎপাদন কমানোর কারণে তৈরি হওয়া ঘাটতি অ্যাপল বা চীনের অন্যান্য অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারগুলো (ওইএম) পূরণ করতে পারেনি। ২০২০ সালে চীনের মোট হ্যান্ডসেট উৎপাদনের বড় অংশ এসেছে হুয়াওয়ের কাছ থেকে। হুয়াওয়ের বেশির ভাগ উৎপাদনই হয় দেশের অভ্যন্তরে। সেখানে অন্যান্য চীনা ওইএমগুলো চায় উৎপাদন ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনতে, স্থানীয় উৎপাদনের মাধ্যমে চাহিদা পূরণের চেষ্টাও করছে প্রতিষ্ঠানগুলো। অ্যাপল পণ্যের বড় অংশই উৎপাদন হয় চীনে। প্রতিষ্ঠানটিও এখন নিজেদের উৎপাদন ক্ষেত্রে কিছুটা বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করছে। চীনে সেলফোনের চাহিদা কিছুটা কমে আসছে। ফলে অনেকেরই আশঙ্কা ভবিষ্যতে হয়তো দেশটিতে উৎপাদনও কমে আসবে।
উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারতও বেশ প্রবৃদ্ধিরই ইঙ্গিত দিচ্ছে। ২০২১ সালে বিশ্বে মোট উৎপাদনের ১৬ শতাংশ করেছিল ভারত, যা বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। অ্যাপল, শাওমি ও অপ্পোর কারণে সেটা আগের বছরের তুলনায় ৫ শতাংশ বেড়েছে। এমনকি আইফোন ১৪ ভারতে উৎপাদনেরও পরিকল্পনা রয়েছে অ্যাপলের, ফলে এক্ষেত্রে দেশটির অবদান আরো বাড়তেই থাকবে। তবে চীনের ওইএমের বানানো কম দামের ফোনগুলোর বিষয়ে ভারত সরকারের বিভিন্ন নীতি এ ধারা আরো ধীর করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।
তবে চীনের ওপর অনেক বেশি পরিমাণে নির্ভরশীল অ্যাপল। কারণ সেখান থেকেই সবচেয়ে বেশি উৎপাদন মেলে। উৎপাদনে বৈচিত্র্য আনা এবং একটি মাত্র দেশের ওপর নির্ভরশীলতা রোধে অ্যাপল এখন চীনের বাইরের উৎপাদন ক্ষেত্রগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। ভারতে আইফোন ১৪ এবং ভিয়েতনামে আইপ্যাড উৎপাদনের চেষ্টাও এরই একটি অংশ। তবে হ্যান্ডসেট তৈরির ক্ষেত্রে বেশ বৈচিত্র্য এনেছে স্যামসাং।