ছবি তোলা বা ফটোগ্রাফির নেশাটা এখন বেশ জনপ্রিয়। কাজটা সর্বস্তরের মানুষের হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে স্মার্টফোন। আপনার কাছে ভালো ও আধুনিক প্রযুক্তির ক্যামেরা সমৃদ্ধ স্মার্টফোন আছে; আপনিও নজরকাড়া ছবি তুলে অন্যদের নজর কাড়তে পারবেন।
স্মার্টফোনে ফটোগ্রাফির এই সময়টাকে গুরুত্ব দিয়ে নিরলসভাবে কাজ করছে স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও। স্মার্টফোনে ফটোগ্রাফি নিয়ে কথা বলতে গেলে যেখানে সবার প্রথমেই আসবে গ্লোবাল স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভিভো’র নাম।
দেশে আসা ভিভো’র সাম্প্রতিক স্মার্টফোনগুলোতে ‘নাইট ফটোগ্রাফি’ বা আঁধারে চিত্রধারণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বেশ ভালো করেই। একটু আঁধার নামলেই বা পর্যাপ্ত আলো না পেলে ছবিটা মনের মতো হয় না। ভিভো সেই চ্যালেঞ্জ জয় করার জন্যই জোর দিয়েছে নাইট ফটোগ্রাফিতে। ভিভো চমৎকার কিছু নাইট ফটোগ্রাফি প্রযুক্তিকেও স্মার্টফোনের প্রতিযোগিতাপূর্ণ বাজারে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে; যা অন্যদের জন্যেও অনুকরণীয় হবে।
ফটোগ্রাফির বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, নাইট ফটোগ্রাফিসহ স্মার্টফোন নিয়ে আজকে কথা বলেছেন ভিভো বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ম্যানেজার ; তানজীব আহামেদ।
আমরা জানি, মোবাইল ফটোগ্রাফি নিয়ে ভিভো প্রতিনিয়ত কাজ করছে। বর্তমানে কী নিয়ে কাজ করছে ভিভো? - এখন ভিভো সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে নাইট ফটোগ্রাফিকে আরো উন্নত করার ওপর। ভিভো এক্স৬০প্রো এর একটি চমৎকার উদাহরণ। চলতি বছর দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনের তালিকায় অন্যতম নাম ভিভো এক্স৬০প্রো। আবার আমাদের সাম্প্রতিক ভি২১ এবং ভি২১ই স্মার্টফোনগুলো লক্ষ্য করলেও আপনারা বুঝতে পারবেন। ভিভো ভি২১ সিরিজকে বলা হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী এবং কনটেন্ট নির্মাতাদের জন্য পারফেক্ট পছন্দ। কেননা, এই সিরিজের স্মার্টফোনগুলোতে বিভিন্ন উন্নত এবং বৈচিত্র্যময় ক্যামেরা প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে ভিভো; যা গ্রাহককে পেশাদার ফটোগ্রাফির অভিজ্ঞতা দিবে। এখন প্রায় সব স্মার্টফোনের ক্যামেরাই অনেক আধুনিক। তবে স্বল্প আলোতে ছবি ভালো তোলাটা এখনো বেশ চ্যালেঞ্জের। একটু অন্ধকারে গেলেই বা রাত হলেই মোবাইল ফটোগ্রাফিতে একটা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। এটি দূর করা গেলেই ভবিষ্যৎ সময়ে পেশাদার ক্যামেরা হিসেবে কাজ করবে স্মার্টফোন।
নাইট ফটোগ্রাফিতে এখন পর্যন্ত ভিভো’র অবদান নিয়ে কিছু বলুন। ভিভো’র মৌলিক কোনো উদ্ভাবন রয়েছে কি?
- ভিভো ভি২১ স্মার্টফোনে আমরা ডুয়াল স্পটলাইট প্রযুক্তি নিয়ে এসেছি। এটা ভিভোর নিজস্ব প্রযুক্তি। স্মার্টফোনটির সামনে দুটি স্পটলাইট রয়েছে যা ব্যবহার করে অনেক অন্ধকারেও উজ্জ্বল ছবি তোলা যাবে। মজার ব্যাপার হলো, ডুয়াল স্পটলাইট প্রযুক্তিটি শুধু ছবি তোলার জন্যে না, ব্যবহার করা যাবে কয়েকটি অ্যাপ ব্যবহারের সময়েও। ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটস অ্যাপ এবং ইন্সটাগ্রাম ব্যবহারের সময় বা ভিডিও কলে কথা বলার সময়; অন্ধকার পরিবেশ থাকলে এই স্পটলাইট ব্যবহার করা যাবে।
এছাড়া ভিভো ভি২১ এবং ভি২১ই স্মার্টফোনে এআই নাইট পোর্ট্রইেট ফিচার যুক্ত করা হয়েছে। এআই নাইট অ্যালগরিদমের সমন্বয়ে এই ফিচার রাতের ছবিকে আরো উজ্জ্বল ও শার্প করে। ভি২১ই স্মার্টফোনে সুপার নাইট সেলফি ফিচার রয়েছে। এতে মাল্টি লেভেল এক্সপোজার রয়েছে। ফলে অন্ধ্কারে ছবি তোলার সময় ক্যামেরা এক্সপোজার লেভেল বেড়ে যায় এবং ছবি উজ্জ্বল আর অনেক বেশি ডিটেইলসহ আসে। এছাড়া আমরা ধীরে ধীরে ক্যামেরা এপারচার কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। আমাদের ভি২১ই স্মার্টফোনে সামনে ক্যামেরায় এপারচার ছিলো এফ ২.০ এবং পেছনের ক্যামেরায় এফ ১.৮৯ । এপারচার যত কম হয় ক্যামেরায় আলোও প্রবেশ করতে পারে তত বেশি। এতে ছবি উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত
বৈশ্বিক বাজার নিয়ে ভিভো’র ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? - বরাবরের মতো স্থানীয় বাজারকেই প্রাধান্য দেবে ভিভো। স্থানীয় বাজার, স্থানীয় গ্রাহকদের সংস্কৃতি, পছন্দ, চাহিদা ও জীবনযাত্রার কথা মাথায় রেখেই ভিভো’র ভবিষ্যৎ বাজার সম্প্রসারণ হবে। স্থানীয় গ্রাহকদের প্রয়োজনের সাথে বৈশ্বিক প্রযুক্তি সমন্বয় করার লক্ষ্যেই ভিভো কাজ করে থাকে। এটাই আসলে অন্য ব্র্যান্ডগুলোর সাথে ভিভো’র অন্যতম প্রধান পার্থক্য।
ভবিষ্যতে স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রিতে ভিভো’র কর্মপরিকল্পনা কি? - সামনের বছরগুলোতে ভিভো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ৫জি প্রযুক্তির উন্নয়নে কাজ করবে। ৫জি প্রযুক্তিতে আমরা এখন প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান। ভিভো’র সবচেয়ে বড় ৫জি বাজার চীন ও ইউরোপে। সম্প্রতি দ্রæত বর্ধমান ৫জি স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের তালিকায় ভিভো দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। এই প্রযুক্তিকে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাওয়াই এখন আমাদের আরেকটি ভিন্নমাত্রার লক্ষ্য।
বাংলাদেশে ভিভো’র স্মার্টফোন ম্যানুফ্যাকচারিং কারখানা রয়েছে। ‘মেইড ইন বাংলাদেশে’র’ ভিভো প্রোডাক্ট থেকে গ্রাহকরা কিভাবে উপকৃত হচ্ছেন? আর ভিভো কি ধরণের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে বলে আপনি মনে করেন।
- বাংলাদেশে’র নারায়ণগঞ্জে আমাদের ভিভো কারখানাটি স্থাপিত হয়েছে। প্রায় দু’বছর ধরেই আমরা এই কারখানাটি পরিচালনা করছি। তাই আমাদের স্মার্টফোন আমদানির খরচ কমেছে অনেকটাই। এ কারণে এখন আমরা নিয়মিত বাজেট স্মার্টফোন এবং মিডরেঞ্জের স্মার্টফোন বাজারে আনতে পারি। এতে করে ভিভো স্মার্টফোনগুলো এখন গ্রাহকের আরো সামর্থ্যের মধ্যে এসেছে। এতে করে ভিভো’ও উপকৃত হয়েছে। কেননা, দেশে ভিভো স্মার্টফোনের গ্রাহক সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বাজার বেড়েছে। এছাড়া দেশেই কারখানা থাকায় এখন অবৈধ স্মার্টফোনের দৌড়াত্ম অনেকটাই কমেছে; যা যেকোনো ব্রান্ডের জন্যেই আশির্বাদ।