ঢাকা | শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৬ পৌষ ১৪৩১ |
২৫ °সে
|
বাংলা কনভার্টার
walton

নতুন চাকরি প্রার্থীরা এ সময়ে যা করবেন

নতুন চাকরি প্রার্থীরা এ সময়ে যা করবেন
নতুন চাকরি প্রার্থীরা এ সময়ে যা করবেন

বৈশ্বিক মহামারির এই সময়ে অর্থনীতির মন্দাবস্থার সঙ্গে সঙ্গে সংগত কারণেই চাকরির বাজারেও দেখা যাচ্ছে কঠিন একটি সময়। চাকরিসন্ধানীদের মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে আছেন যাঁরা মাত্র স্নাতক শেষ করে চাকরি খুঁজছেন, অথবা যাঁরা অচিরেই স্নাতক শেষ করে চাকরি খোঁজা শুরু করবেন। এই সময়ে চাকরির বাজারে নবীন হিসেবে তাই নিতে হবে বাড়তি প্রস্তুতি, যা আপনাকে গড়ে তুলবে অনেকের মধ্যে প্রত্যাশিত একজন হিসেবে।

চাকরির প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে তাই মনোযোগ দিতে হবে পাঁচটি বিষয়ে—

১. গড়ে তুলুন সঠিক মানসিকতা

অন্যান্য যেকোনো বিষয়ের প্রস্তুতির মতো চাকরির প্রস্তুতিতেও শুরু করতে হবে মানসিকভাবে নিজেকে তৈরি করার মাধ্যমে। চাকরির জন্য সঠিক মানসিকতা কী? একেবারেই নবীন হিসেবে এই প্রশ্নের উত্তর বের করতে আপনার হিমশিম খাবারই কথা। আদতে এই প্রশ্নের উত্তর ততটা জটিল নয়। নিজের সামর্থ্য, শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা বুঝে কাজ করার ও শেখার আগ্রহ, দলের মধ্য থেকে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে পারার মানসিকতাই আপনাকে চাকরির প্রতিযোগিতায় অন্যদের চেয়ে আলাদা করে তুলবে। তাই সময় নিয়ে নিজের সামর্থ্য, শক্তিমত্তা ও দুর্বলতা বুঝুন। নিজের সামর্থ্য ও শক্তিমত্তার সঙ্গে মেলে—এমন চাকরির জন্য আবেদন করা শুরু করুন। যেসব দুর্বলতার জন্য চাকরিতে সমস্যা হতে পারে, সেগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য কাজ করা শুরু করুন। সঙ্গে দলগতভাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা জমা করতে থাকুন।

২. চাকরিদাতা সম্পর্কে জানুন চাকরির আবেদনপ্রক্রিয়া, বিশেষ করে সাক্ষাৎকারের জন্য যে প্রতিষ্ঠানের চাকরির জন্য আবেদন করতে যাচ্ছেন, সে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি। ভাইভার আগেই ওই প্রতিষ্ঠান ও তাঁদের কাজ সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও অর্জনের ব্যাপারেও ভালো ধারণা থাকা আবশ্যক। এসব ব্যাপারে জানার জন্য প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজ খুবই কার্যকরী। ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজ না থাকলে গুগল করে জেনে নিতে পারেন প্রাসঙ্গিক তথ্যগুলো।

৩. সফট স্কিল বাড়ান উচ্চ সিজিপিএ বেশ প্রশংসনীয় একটি অর্জন, কিন্তু শুধু এই অর্জনের পিঠে চড়েই সমুদ্রসম চাকরির প্রতিযোগিতা পার করা অসম্ভব। চাকরির জন্য যোগ্য হয়ে উঠতে তাই ভালো ফলাফলের পাশাপাশি সফট স্কিল বাড়ানোর দিকেও মনোযোগ থাকা চাই। সফট স্কিল কী? সফট স্কিল হচ্ছে কারিগরি দক্ষতার বাইরে সেই সব দক্ষতা, যার মাধ্যমে আপনি কর্মক্ষেত্রে আপনার কাজগুলো ঠিকমতো করতে পারবেন। এর মধ্যে আছে মানুষ ব্যবস্থাপনা, দ্বন্দ্ব ব্যবস্থাপনা, সময় ব্যবস্থাপনা, সহকর্মী কিংবা গ্রাহকের প্রতি সহমর্মিতা ইত্যাদি। সফট স্কিলগুলো কর্মক্ষেত্রে একজন পেশাজীবীর সাফল্যের হার বাড়িয়ে তোলে অনেক গুণ। তাই চাকরিদাতারা সাধারণত চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে এমন গুণগুলো খোঁজেন। সফট স্কিল বাড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের শুরু থেকেই প্রস্তুতি নিতে বিভিন্ন ক্লাব বা সোসাইটিতে ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করা ইত্যাদি বেশ সহায়ক হয়।

৪. যোগাযোগ দক্ষতা বাড়ান যোগাযোগ দক্ষতা বা কমিউনিকেশন স্কিল যেকোনো চাকরির জন্যই বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি দক্ষতা, যেটি আপনাকে অন্য প্রার্থীদের চেয়ে অনেক এগিয়ে রাখবে। শুদ্ধভাবে কথা বলতে পারা, শ্রোতার অবস্থা বুঝে কথা বলা, সঠিক সময় সঠিক কথাটি বলতে পারা, কখন চুপ করে থাকাই শ্রেয় তা বোঝা, ভালো শ্রোতা হওয়া, সঠিকভাবে দাপ্তরিক বিষয়ে লেখা, ইত্যাদি আয়ত্ত করতে পারলে আপনি চাকরি তো বটেই, এগিয়ে থাকবেন জীবনের যেকোনো ক্ষেত্রেই। এই বিষয়গুলো আয়ত্ত করতে সফট স্কিলের মতোই আপনাকে বিভিন্ন পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে কাজ করতে হবে।

৫. আবেদনের জন্য কাগজপত্র ঠিক রাখা চাকরির আবেদনের জন্য আপনাকে অবশ্যই ঠিকভাবে ব্যক্তিগত সিভি, কভার লেটার ইত্যাদি প্রস্তুত রাখতে হবে। এ জন্য আপনার জানা দরকার কীভাবে ব্যক্তিগত সিভি, কভার লেটার লিখতে হয়। অনেকে পরিচিত মানুষের সিভি নিয়ে কিছু জিনিস পাল্টে সেই সিভি ব্যবহার করেন, অনেকে ভুল রেফারেন্স ব্যবহার করেন। এতে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা তো বাড়েই না, বরং কমে যায় বহুগুণে। নিজের জন্য তাই স্বতন্ত্র ও প্রাসঙ্গিক সিভি তৈরি করতে হবে। সেই সঙ্গে যেসব মানুষের সঙ্গে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা আপনার আছে ও যাঁরা আপনার রেফারেন্স হতে চান, তাঁদেরই রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করবেন। আপনার সম্পর্কে রেফারেন্সের ব্যক্তির প্রাসঙ্গিক কিছু প্রশংসা আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে অনেকখানি।

নতুন চাকরি প্রার্থীরা এ সময়ে যা করবেন
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Transcend