যে কারো ইউটিউব চ্যানেল হ্যাক হওয়া অস্বাভাবিক কোনও ঘটনা নয়। কারণ, ইউটিউব চ্যানেল প্রতিনিয়তই হ্যাক হচ্ছো আপনি যদি কোনও জনপ্রিয় ইউটিউব চ্যানেলের মালিক হয়ে থাকেন, তবে আপনিও হ্যাকিং এর বিক থেকে মুক্ত নন। বরং, আপনার চ্যানেল যত জনপ্রিয়, আপনার রিফও তত বেশি।
হ্যাকাররা সাধারণত কোনও সাধারণ চ্যানেল হ্যাক করে না। তাদের টার্গেট থাকে জনপ্রিয় চ্যানেল, যে চ্যানেলের সাবস্কাইবার বেশি এবং ভিউ বেশি। এ ধরণের চ্যানেল হ্যাক করে তারা চ্যানেলের মালিককে বিপদে ফেলে দেয়। অনেক হ্যাকার মজা করার জন্যে এটা করে, আবার কিছু হ্যাকার টাকা খাওয়ার জন্যে হ্যাক করে।
হ্যাকার যে উদ্দেশ্যেই হ্যাক করুক না কেন, আপনি নিশ্চয়ই চান না যে আপনার জনপ্রিয় চ্যানেলটি অ্যাক হয়ে যাক। সুতরাং, আপনার চ্যানেলটিকে রক্ষা করা আপনারই দায়িত্ব। আমার দায়িত্ব হচ্ছে আপনাকে জানিয়ে দেয়া যে কী কী উপায়ে আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলটিকে হ্যাকারের হাত থেকে কাকাতে পারেন।
অ্যাকাউন্ট খোলার সময় আমাদের অনেকেই অত্যন্ত সাধারণ কোনও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকেন। যেমন, কেউ নিজের মোবাইল নাম্বার, কেউ তার জন্মদিনের সংখ্যা, কেউ নিজের প্রেমিক বা প্রেমিকার নাম, ইত্যাদি দিয়ে পাসওয়ার্ড সেট আপ করে থাকেন। আর এ ধরণের পাসওয়ার্ড অত্যন্ত বিভি। কেননা, হ্যাকাররা প্রথমদিকে এইগুলো দিয়েই অ্যাকাউন্ট লগ ইন করার চেষ্টা করে থাকে।
সুতরাং, হ্যাকারের হাত থেকে ইউটিউব চ্যানেলকে রক্ষা করতে হলে স্ট্রং বা শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। ফেসবুক, ইউটিউবসহ যে কোনও প্লাটফর্মের জন্যে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করার উপায় জেনে নিন এবং সে মোতাবেক পাসওয়ার্ড সেট করুন।
কখনোই বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের জন্যে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। প্রতিটা প্লাটফর্মের জন্যে আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড সেট করুন এবং সেগুলো কোথাও লিখে রাখুন। সবচেয়ে ভাল হয় একটা নোট প্যাডে নিয়ে সেটাকে গুগল ড্রাইভে সেভ করে রাখা।
২. টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন সেট করুনযে কোনও অ্যাকাউন্ট সুরক্ষার অন্যতম জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন। এটি দুই স্তর বিশিষ্ট্য সিকিউরিটি সিস্টেম যা মূলত মোবাইল নাম্বার দিয়ে সেট আপ করা হয়। অনেকেই আগে থেকে জানেন যে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন কি এবং কেন ব্যবহার করতে হয়। যারা জানেন এবং যারা জানেন না, তাদের সবার জন্যেই ইউটিউব চ্যানেল সুরক্ষার প্রথম ধাপটিই হচ্ছে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন সেট করা।
টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন সেট করার পর যদি কোনও হ্যাকার আপনার ইউটিউব চ্যানেল হ্যাক করার চেষ্টা করে, তবে সে কখনোই সফল হবে না। কেননা, যতবার সে পাসওয়ার্ড দেবে, যদি সেটা সঠিকও হয়, আপনার মোবাইলে এস এম এসের মাধ্যমে একটি কোড আসবে। হ্যাকারের পক্ষে সেই কোডটি জানা সম্ভব না, যেহেতু কোডটি আসবে আপনার মোবাইলে। সুতরাং, হ্যাকার কোডটিও ইনপুট দিতে পারবে না, আপনার চ্যানেলও হ্যাক করতে পারবে না। বরং, বারবার ট্রাই করার কারণে সে লগ আউট হয়ে যাবে।
সুতরাং, আপনার ইউটিউব চ্যানেলকে সুরক্ষিত রাখতে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন সেট করে নিন।
৩. মাল্টিপল অ্যাক্সেস বন্ধ করে দিনআপনি যদি একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে আপনার ইউটিউব চ্যানেলের অ্যাক্সেস শেয়ার করে থাকেন, তবে নিশ্চিত হয়ে নিন যে যারা এখন আর আপনার চ্যানেলের সঙ্গে যুক্ত নেই, তাদের অ্যাঞ্জেস বন্ধ করে দিয়েছেন।
এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার যে আপনার চ্যানেলটির যথাযথ পরিচালনার জন্যে আপনি একাধিক লোককে অ্যাকাউন্ট অ্যাক্সেস দিয়েছেন। কিন্তু এটা অত্যন্ত অবাভাবিক ব্যাপার যে আপনি আর কখনোই তাদের অ্যাক্সেস বন্ধ করেননি যারা এখন আর আপনার চ্যানেলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নেই।
বুঝতেই পারছেন একাধিক লোকের অ্যাক্সেস থাকা চ্যানেল হ্যাকিং এর ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক। তাই, আপনার উচিৎ অন্যান্য সকলের অ্যাক্সেস আজই বন্ধ করে দেয়া, বিশেষ করে তাদের যারা এখন আর আপনার চ্যানেলের জন্যে কাজ করছেন না। কিংবা কাজ করার দরকারও হচ্ছে না। হতে পারে, এক সময় তাঁরা আপনার বন্ধু ছিল, কিন্তু এখন আর বন্ধু নেই। কিংবা, এখনো বন্ধু আছে কিন্তু শত্রু হতে কতক্ষণ
৪. অন্যের কম্পিউটার থেকে লগইন করবেন নাবন্ধু কিংবা আত্মীয়ের বাসায় গিয়েছেন, যেতেই পারেন, তবে সেখানকার কোনও কম্পিউটার বা স্মার্টফোন থেকে আপনার ইউটিউব চ্যানেল লগইন করবেন না। কারণ, কারো ডিভাইস থেকে অ্যাকাউন্ট লগইন করার পর প্রায়ই আমরা লগ আউট করতে ভুলে যাই। হলে, যার ডিভাইস থেকে লগইন করা হয় তার। পক্ষে আমাদের অ্যাকাউন্টের অ্যাঞ্জেস পাওয়া সহজ হয়ে যায়।
৫. সন্দেহজনক কোনও লিংকে ক্লিক করা থেকে বিরত থাকুন আপনার ইনবক্সে এমন কিছু ইমেল আসতে পারে যেগুলোতে আপনাকে কোনও লটারি জেতা কিংবা অন্য কোনও ভাল খবর দেয়া হয়। হতে পারে আপনাকে বলা হচ্ছে যে ফ্রিতে এক মিলিয়ন সাবক্রাইবার পেতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন। এ জাতীয় কোনও ইমেলে কখনোই ক্লিক করবেন না। কারণ, এগুলোর সবই ফিশিং ইমেল, হ্যাকারদের টেকনিক।