ল্যাপটপ বর্তমান সময়ে অধিকাংশ পেশাদারের দৈনন্দিন জীবনের অংশ। লেখক, ডিজাইনার, ইঞ্জিনিয়ার বা প্রোগ্রামারের জন্য এটি অতিপ্রয়োজনীয় একটি ডিভাইস। ডেস্কটপ কম্পিউটারের তুলনায় ল্যাপটপ অনেক বেশি সুবিধাজনক। ছোট আকৃতি ও হালকা ওজন। এছাড়া প্রতিটি ল্যাপটপের সঙ্গে ব্যাটারি যুক্ত থাকায় অনেকের জন্য ডেস্কটপের চেয়ে ল্যাপটপ বেছে নেয়া সহজ হয়ে যায়। কিছু ল্যাপটপে থাকে অপসারণযোগ্য ব্যাটারি। ডিভাইসের বয়স বাড়ার সঙ্গে ব্যাটারির সক্ষমতাও কমতে থাকে। এ সময় ল্যাপটপের কার্যকারিতাও কমতে থাকে। একটা সময় বারবার ব্যাটারি পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়। তবে বেশকিছু সতর্কতা ও কৌশল অবলম্বন করে ব্যাটারির হেলথ চেক করা ও ভালো রাখা যায়। এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট গিজচায়না।
লো ব্যাটারি হেলথের লক্ষণ: ব্যাটারি কখন পরিবর্তন করতে হবে এর কিছু লক্ষণ রয়েছে। লক্ষণগুলো একটু বিভ্রান্তিকর মনে হতে পারে। নতুন ল্যাপটপের ব্যাটারিতে প্রায় ৮ ঘণ্টা ব্যাকআপ পাওয়া যায়। তবে এক বা দুই বছর পর এটি প্রায় ৫ ঘণ্টা কমে যেতে পারে। ব্যাটারির ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণেই এমনটা হয়ে থাকে। এছাড়া পিসির কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে। এর মধ্যে কোনো কারণ ছাড়াই ল্যাপটপ বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও রয়েছে। কিংবা ব্যাটারি মোডে ল্যাপটপ ধীরে কাজ করবে। এসব কারণে ব্যাটারির মান নিয়ে সন্দেহ তৈরি হবে। স্বাভাবিকভাবে কম্পিউটারের মাদারবোর্ডের সমস্যা বলে মনেও করেন অনেকে। আবার অন্য ক্ষেত্রে, ল্যাপটপটি চার্জ হওয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যতক্ষণই চার্জে রাখা হোক না কেন, চার্জ নেবে না। হয়তো চার্জিং সাইন দেখা যাবে তবে কখনই চার্জ হয় না। অনেকেই এক্ষেত্রে চার্জারের সমস্যা মনে করেন। নতুন চার্জার কেনার জন্য অর্থ ব্যয় করেন।
এজন্য উইন্ডোজ ল্যাপটপের বিভ্রান্তিকর আচরণের লক্ষণ দেখা গেলে ব্যাটারির হেলথ চেক করা প্রথম কাজ। যদি ব্যাটারির হেলথ অনেক কম থাকে তখন তা ল্যাপটপে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করবে।
উইন্ডোজ ল্যাপটপের ব্যাটারির হেলথ চেক করার পদ্ধতি: এটি খুবই সংক্ষিপ্ত ও সহজ। এমনকি পাঁচ বছর বয়সী শিশুও এটি করতে পারে। কম্পিউটার সম্পর্কে সামান্য জ্ঞান থাকলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এজন্য শুরুতেই ব্যাটারি ইনফো ভিউ নামে খুব ছোট একটি সফটওয়্যার ডাউনলোড করতে হবে। এটি পিসিতে ইনস্টল করারও প্রয়োজন হবে না। সহজেই করতে এই ধাপগুলো অনুসরণ করুন—
প্রথমত: ব্যাটারি ইনফো ভিউ নামের সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করতে হবে।
দ্বিতীয়ত: ডাউনলোড করা ফাইলটি খুঁজে বের করতে হবে। সাধারণত সফটওয়্যারটি জিপ ফাইলে ডাউনলোড হবে। এরপর উইনআরএআর বা আনজিপিং কোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করে এটি পছন্দমতো নতুন কোনো ফোল্ডারে এক্সট্রাক্ট করে নিতে হবে। তবে সরাসরি আনজিপিং সফটওয়্যার থেকেও এটি ব্যবহার করা যাবে।
তৃতীয়ত: এক্সট্রাকশন শেষ হলে ‘ব্যাটারিইনফোভিউ ডট ইএক্সই’ নামে একটি ফাইল পাওয়া যাবে।
চতুর্থত: ফাইলটিতে ডাবল ক্লিক করে রান করতে হবে। এরপর একটি নতুন উইন্ডো খুলবে। এখানে ল্যাপটপের ব্যাটারি সম্পর্কে বেশকিছু তথ্য দেখানো হবে। ল্যাপটপের ব্যাটারির সামগ্রিক অবস্থা সম্পর্কেও তথ্য পাওয়া যাবে।
ল্যাপটপের ব্যাটারির হেলথ চেক করার জন্য এটুকুই যথেষ্ট। সুতরাং যখন ল্যাপটপ অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে, শুরুতেই এভাবে ব্যাটারির অবস্থা ভালো করে পরীক্ষা করা উচিত। যদি ব্যাটারির হেলথ ৭০ শতাংশের নিচে থাকে, তবে এটি পরিবর্তন করতে হতে পারে। তবে ৭০ শতাংশের নিচে থাকা অবস্থায় ল্যাপটপটি ভালোভাবে কাজ করলে আরো কিছুদিন ব্যবহার করা যাবে। তবে সংকোচ থাকলে ব্যাটারি পরিবর্তন করে নেয়াই ভালো।