নেটিজেনদের স্বার্থে দেশভিত্তিক সমান্তরাল বৈশ্বিক নিয়ম প্রণয়নে বিশ্বের ৬০টি দেশের সঙ্গে জোট বেঁধেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মানবাধিকার, মৌলিক স্বাধীনতা ও গোপনীয়তা সুরক্ষা অক্ষুণ্ণ রেখে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্যের অবাধ প্রবাহকে এগিয়ে নিয়ে বিশ্বব্যাপী একটি ডিজিটাল ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতেই মাল্টিস্টেকহোল্ডার পদ্ধতিতে একটি সার্বজনীন ইন্টারনেট প্রশাসন গড়ে তুলবে এই জোট।
“ইন্টারনেটের ভবিষ্যত” স্লোগানে বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল, ২০২২) এ বিষয়ে একটি রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষরিত হয়েছে। আলবেনিয়া, আন্দোরা, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, কাবো ভার্দে, কানাডা, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, ক্রোয়েশিয়া, সাইপ্রাস, চেক প্রজাতন্ত্র, ডেনমার্ক, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র, এস্তোনিয়া, ইউরোপীয় কমিশন, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জর্জিয়া, জার্মানি, গ্রীস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, ইজরায়েল, ইতালি, জ্যামাইকা, জাপান, কেনিয়া, কসোভো, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া, লুক্সেমবার্গ, মালদ্বীপ, মাল্টা, মার্শাল দ্বীপপুঞ্জ, মাইক্রোনেশিয়া, মলদোভা, মন্টিনিগ্রো, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড , উত্তর মেসিডোনিয়া, পালাউ, পেরু, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, সেনেগাল, সার্বিয়া, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন, তাইওয়ান, ত্রিনিদাদ, টোবাগো, যুক্তরাজ্য, ইউক্রেন এবং উরুগুয়ে এই চুক্তিতে সই করেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশসহ চুক্তির বাইরে রয়েছে এশিয়ার প্রায় সবগুলো দেশই।
‘ডেক্লেরেশন ফর দ্য ফিউচার অফ দ্য ইন্টারনেট’এই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করার সময়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অংশীদাররা নিজস্ব এখতিয়ারের মধ্যে এবং নিজ নিজ দেশীয় আইন এবং আন্তর্জাতিক আইনি বাধ্যবাধকতা অনুসারে একে অপরের নিয়ন্ত্রক স্বায়ত্তশাসনকে সম্মান করার সাথে এই নীতিগুলোকে বিশ্বব্যাপী প্রচার করতে একসাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।
চুক্তি বিষয়ে হোয়াইট হাউস বলছে, বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল কর্তৃত্ববাদের প্রবণতা প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে। যেখানে কিছু রাষ্ট্র মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে দমন করার জন্য কাজ করছে। স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমকে সেন্সর করছে। নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করছে। ভুল তথ্য প্রচার করছে এবং তাদের নাগরিকদের অন্যান্য মানবাধিকার অস্বীকার করছে। একই সময়ে, কোটি কোটি লোক এখনও ইন্টারনেটের আওতায়র বাইনে থাকছে। আবার যারা যুক্ত হচ্ছেন তারা সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি, হুমকি নেটওয়ার্কগুলোর বিশ্বাস এবং নির্ভরযোগ্যতা কমে যাওয়ায় বাধার সম্মুখীন হচ্ছে৷
এরই মধ্যে বাইডেন প্রশাসন বলছে, রাশিয়া এবং চীনের মতো দেশগুলির ইন্টারনেট নীতির “বিপজ্জনক নতুন মডেল” লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একে মোকাবেলা করতে হবে। ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর থেকে, রাশিয়া আক্রমণের শুরুতে একটি স্যাটেলাইট ইন্টারনেট প্রদানকারীর নেটওয়ার্কে হ্যাকিং সহ সাইবার আক্রমণ শুরু করে। তাই এই ঘোষণাটি ইন্টারনেট এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির জন্য ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি অগ্রসর, অংশীদারদের মধ্যে একটি রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির প্রতিনিধিত্ব করবে। এটি একুশ শতকের বিশ্বব্যাপী সুযোগ এবং চ্যালেঞ্জের মুখে ইন্টারনেটের প্রতিশ্রুতি পুনরুদ্ধার করবে। এর ফলে- সত্যিকারের উন্মুক্ত এবং প্রতিযোগিতা, গোপনীয়তা এবং মানবাধিকার উৎসাহিত হবে৷