নিজ দেশের টেলিযোগাযোগ সরবরাহকদের ৫জি নেটওয়ার্কে হুয়াওয়ে ও জেডটিই’র মতো চীনা কোম্পানির যন্ত্রাংশ ব্যবহার বন্ধের পরিকল্পনা করছে জার্মানির সরকার।
এরইমধ্যে বিভিন্ন নেটওয়ার্কে থাকা এ ধরনের উপাদানগুলো এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়তে পারে। ফলে, এগুলোও সরবরাহকদের সরাতে ও বদলাতে হতে পারে বলে সোমবার এ বিষয়ে সরকার সংশ্লিষ্ট সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জার্মান সংবাদমাধ্যম জিট অনলাইন।
চীনের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্কের আওতা পুনরায় বিবেচনা করা দেশটির সরকারের মন্তব্য রয়টার্স জানতে চাইলে, তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া মেলেনি। তবে, এক সূত্র ওই প্রতিবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হুয়াওয়ে ও জেডটিই ’র সমালোচকরা বলছেন, চীনের নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ট সম্পর্কের মানে দাঁড়ায় ভবিষ্যতে বৈশ্বিক মোবাইল নেটওয়ার্কে তাদের যুক্ত করলে চীনা গুপ্তচর, এমনকি নাশকতাকারীরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে প্রবেশের সুযোগ পেতে পারে।
হুয়াওয়ে, জেডটিই ও চীনা সরকার এই দাবি নাকচ করে বলছে, চীনের বাইরের প্রতিদ্বন্দ্বীদের তারা ‘সুরক্ষামূলক দৃষ্টিভঙ্গি’ থেকে সমর্থন করে।
হুয়াওয়ের এক মুখপাত্র বলেন, নির্দিষ্ট কিছু যন্ত্রাংশের ব্যবহার নিয়ে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার অনুমান সম্পর্কে তারা কোনো মন্তব্য করবেন না। তিনি আরও বলেন, জার্মানি ও বাকি বিশ্বে প্রযুক্তি সরবরাহে গত ২০ বছর ধরে কোম্পানির ‘খুব ভালো নিরাপত্তা রেকর্ড’ ছিল। এ প্রসঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি জেডটিই।
২০২১ সালে জার্মানি এক আইটি সুরক্ষা আইন পাস করে, যা পরবর্তী প্রজন্মের বিভিন্ন নেটওয়ার্কের টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম উৎপাদককদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে, হুয়াওয়ে ও জেডটিই’র ওপর এতোদিন সরাসরি নিষেধাজ্ঞা দেয়নি দেশটি।
নতুন এক প্রতিবেদন দেখাচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে জার্মানি ৪জি’র বদলে ৫জি ‘রেডিও অ্যাক্সেস নেটওয়ার্ক (আরএএন)’ সুবিধা পেতে হুয়াওয়ের ওপর তুলনামূলক বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। সরবরাহকরা অবশ্য নিজেদের মূল নেটওয়ার্কে এই কোম্পানির প্রযুক্তির ব্যবহার এড়িয়ে চলছেন।
জিট অনলাইন বলেছে, বেশ কয়েক মাস ধরেই দেশটির সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যবেক্ষণ করে বোঝার চেষ্টা করছে, ৫জি নেটওয়ার্কে ক্রমাগত বাড়তে থাকা এইসব উপাদান দেশটির নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে কি না।
সরকারী সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদপমাধ্যমটি বলছে, এই জরিপ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ না হলেও এর ফলাফল এরইমধ্যে পরিষ্কার। তা হলো, দেশটির সরকার বিভিন্ন অপারেটরের ৫জি নেটওয়ার্কে হুয়াওয়ে ও জেডটিই’র তৈরি কিছু সংখ্যক নিয়ন্ত্রক উপাদানের ব্যবহার নিষিদ্ধ করবে।