ঢাকা | বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ |
২৯ °সে
|
বাংলা কনভার্টার
walton

১০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম বেসরকারি সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ

১০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম বেসরকারি সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ
১০০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম বেসরকারি সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ

বেসরকারি খাতের ৩ কোম্পানি বাংলাদেশকে নতুন সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত করতে যাচ্ছে।

খরচ সাশ্রয়ী করতে একটি ক্যাবলেই আলাদা আলাদা ৩টি ফাইবার পেয়ার সরাসরি বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর রুটে যুক্ত হবে। প্রতিটি পেয়ারের সক্ষমতা ১৫ হাজার জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ করে মোট ৪৫ হাজার জিবিপিএস। যার লাইফ টাইম ২৫ বছর।

কোম্পানি তিনটি সামিট কমিউনিকেশন্স, সিডিনেট কমিউনিকেশন্স এবং মেটাকোর সাবকম ইতোমধ্যে এই উদ্যোগের মূল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে।

তারা বলছে, নীতিগত ও প্রশাসনিক কার্যক্রম তারা শেষ করেছেন।

কোম্পানিগুলো ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বেসরকারি সাবমেরিন ক্যাবল সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস লাইসেন্স লাইসেন্স পায়।

২০২৫ সালের মাঝামাঝিতে এই সাবমেরিন ক্যাবলগুলোতে হতে বাংলাদেশে ব্যান্ডউইথ যোগ হতে পারে, এমনটাই পরিকল্পনা করেছেন উদ্যোক্তারা ।সিঙ্গাপুরভিত্তিক ক্যাম্পানা গ্রুপের কাছের প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার এই ফাইবার পেয়ারগুলো লিজ নিচ্ছে কোম্পানি তিনটি।

ক্যাম্পানা গ্রুপের এই ক্যাবল রয়েছে সিঙ্গাপুর হতে মিয়ানমার রুটে, যার নাম সিগমার ট্রাঙ্ক ক্যাবল। আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় ওই রুটের যেখান দিয়ে বাংলাদেশের অংশের সংযোগ নেয়া হবে সেটি ব্র্যাঞ্চিং ইউনিট। মানে, সিঙ্গাপুর হতে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটারের শেষ ব্র্যাঞ্চিং ইউনিট হতে বাংলাদেশ পর্যন্ত নিজেদের ক্যাবল টেনে নেবে তিন কোম্পানি, যেটুকুর দূরত্ব ১ হাজার ১০০ কিলোমিটার।

কোম্পানিগুলোর শীর্ষ পর্যাযের কর্মকর্তারা বলছেন, ডলারে বাড়তি রেটের কারণে ক্যাম্পানা গ্রুপের কাছ হতে ফাইবার লিজ, ব্র্যাঞ্চিং ইউনিট তৈরিও বাংলাদেশ পর্যন্ত ক্যাবলটা, যন্ত্রপাতি কেনা সবমিলে এই প্রকল্পে ২ হাজার কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ করতে হতে পারে। শুধু ক্যাম্পানা গ্রুপের কাছ হতে ফাইবার লিজেই তিন কোম্পানিকে এককালীন ভ্যাট-ট্যাক্স ছাড়াই ৪০০ কোটি টাকার মতো খরচ করতে হয়েছে। এরপর রয়েছে মেইন্টেন্যান্স।

ক্যাম্পানা যাদের দিয়ে ট্র্যাঙ্ক ক্যাবল করিয়েছে তাদের সঙ্গে চুক্তি করছে তিন কোম্পানি। ইতোমধ্যে এমওইউ করা হয়েছে। সার্ভে এগ্রিমেন্টও হয়েছে। এখন সাপ্লাই চুক্তির টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন প্রায় শেষ হয়ে আসছে। এই কোম্পানি ক্যাবল, রিপিটারসহ যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবে এবং ক্যাবলটি সমুদ্রের নীচ দিয়ে বসিয়ে কক্সবাজারের স্টেশনে এনে দেবে।

সার্ভে শুরু হবে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস হতে।ইতোমধ্যে ল্যান্ডিং স্টেশন করার জন্য জায়গা চূড়ান্ত করা হয়েছে। মাসখানের মধ্যে এই জায়গা কেনার আনুষ্ঠানিকতাও সেরে ফেলা হবে। সমুদ্র তীর হতে এই স্টেশন দুই কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে। স্টেশন হতে ফাইবার ক্যাবল ঢাকা পর্যন্ত আনতে কোম্পানিগুলোর নিজেদের বসানোর অনুমতি থাকলেও এটি এনটিটিএন কোম্পানি দিয়ে করানোর কথা ভাবা হচ্ছে।

মেটাকোরের পরিচালক মোহাম্মদ আমিনুল হাকিম বলেন, ‘ভারতে হতে ব্যান্ডউইথ আমদানি করতে এখন অনেক ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে। নতুন এই ক্যাবলগুলো সংযোগে এলে তখন এটি কমে যাবে। আইটিসিগুলো ব্যান্ডউইথ নেবে, আইআইজিগুলো তো নেবেই।’

শুরুতে ব্যান্ডউইথ ভলিউম কেমন হবে এমন জিজ্ঞাসায় তিনি বলেন, ‘কত জিবিপিএস দিয়ে কোম্পানিগুলো শুরু করবে তা এখনও ঠিক হয়নি। এটি নির্ভর করবে বাজারে আসার সময় বাজার চাহিদার উপর। একেকজন একেকভাবে ডেপ্লয় করবে। ধরা যাক, কেউ হয়তো ১০ হাজার জিবিপিএসর সুইচ বসালো সে তখন ওই পরিমাণ ব্যান্ডউইথ দিয়েই শুরু করলো। পরে চাহিদা অনুযায়ী ক্যাপাসিটি বাড়ালে তখন ব্যান্ডউইথ বাড়লো।

সিডিনেট কমিউনিকেশন্সের সিইও মশিউর রহমান বলেন, ‘তাদের ক্যাবল স্বল্প দূরত্বের। সিঙ্গাপুর হতে কক্সবাজার পর্যন্ত দূরত্ব হলো ৩ হাজার কিলোমিটার। তাদের এই ক্যাবলের ল্যাটেন্সি কম, বিএসসিপিএলসি হতে অন্তত ১০ মিলিসেকেন্ড কম। সিঙ্গাপুরে এই ল্যাটেন্সি হবে ৩০ মিলিসেকেন্ড । অন্যদিকে বিএসসিপিএলসির প্রথম ক্যাবলে আছে প্রায় ৫০ মিলিসেকেন্ড এবং দ্বিতীয় ক্যাবলে ৪০ মিলিসেকেন্ড।মশিউর রহমান বলেন, ‘ইতোমধ্যে ভারতের সেভেন সিস্টার এবং ভুটান নেপাল ব্যান্ডউইথ নেয়ার কথা জানিয়েছে। বাজারের চাহিদা ২০২৫ সাল নাগাদ ১৫ হাজার জিবিপিএসের মতো হবে। যদিও বিটিআরসির হিসাবে তা আরও বেশি। কিন্তু আমরা একটা কনজারভেটিভ হিসাবে এটা দেখছি। দেখা যাবে এর আরও ৫ বছর পর আমরা দ্বিতীয় আরেকটি ক্যাবল নিয়ে আসবো।’

এখন পর্যন্ত সরকারি কোম্পানি বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসির (বিএসসিপিএলসি) সি-মি-উই-৪ এবং সি-মি-উই-৫ কনসোর্টিয়ামে দুটি সাবমেরিন ক্যাবলে বাংলাদেশকে যুক্ত করেছে। কোম্পানিটি সি-মি-উই-৬ কনসোর্টিয়ামে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলেও যুক্ত হয়েছে তবে সেটি বাস্তবায়ন হয়ে ব্যান্ডউইথ যোগ হওয়ার কথা ২০২৫ সালের শেষ দিকে।

দেশের প্রথম সাবমেরিন ক্যাবল সি-মি-উই-৪ এ এখন প্রায় ৮০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইথ আসে, এর ক্ষমতা ৮৫০ জিবিপিএস। তবে এর ক্ষমতা প্রায় ছয় গুণ বাড়িয়ে ৪ হাজার ৬০০ জিবিপিএস করতে ৩ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে কোম্পানিটি। দ্বিতীয় ক্যাবল সি-মি-উই ৫ এর এখন ব্যান্ডউইথ আসে ১ হাজার ৭০০ জিবিপিএস।আর কোম্পানিটির তৃতীয় ক্যাবলে শুরুতে ১৩ হাজার ২০০ জিবিপিএস ব্যান্ডউইডথ সক্ষমতা পাবে বলে বলছে বিএসসিপিএলসি।

১০০০ কোটি টাকা,প্রথম বেসরকারি সাবমেরিন ক্যাবল,সামিট কমিউনিকেশন্স,সিডিনেট কমিউনিকেশন্স,মেটাকোর সাবকম
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
Transcend