আমেরিকার সরকারকে ৫জি প্রযুক্তির প্রচলনে বিলম্বের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বের শীর্ষ দুই উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।
বোয়িও ও এয়ারবাসের আশঙ্কা, “এভিয়েশন শিল্পের উপর ভয়াবহ বিরূপ প্রভাব ফেলবে” ৫জি প্রযুক্তি।নিজেদের আশঙ্কার কথা জানিয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লিখেছেন দুই প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীরা।
৫জি ওয়্যারলেসের সি-ব্যান্ড স্পেকট্রাম উড়োজাহাজের যন্ত্রপাতির কার্যক্ষমতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন আগেই। অন্যদিকে, ৫ জানুয়ারি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ৫জি সেবা চালু করবে মার্কিন টেলিকম জায়ান্ট এটিঅ্যান্ডটি এবং ভেরাইজন।
“৫জি’র হস্তক্ষেপে উড়োজাহাজগুলোর নিরাপদে পরিচালনার সক্ষমতা নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত হতে পারে।”-- মার্কিন পরিবহন মন্ত্রী পিট বুটিজেজের কাছে লেখা চিঠিতে বলেছেন বোয়িং ও এয়ারবাস প্রধান ডেভ ক্যালহোউন এবং জেফরি নিটেল।
চিঠিতে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ‘এয়ারলাইনস ফর আমেরিকা’র গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য উল্লেখ করেছেন দুই প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা। গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, ‘ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ)’র ৫জি নীতিমালা ২০১৯ সালে কার্যকর হলে প্রায় তিন লাখ ৪৫ হাজার যাত্রীবাহী ফ্লাইট এবং পাঁচ হাজার চারশ’ কার্গো ফ্লাইট বিলম্বিত বা বাতিল হতো।
মার্কিন এভিয়েশন শিল্প এবং এফএএ ৫জি প্রযুক্তি স্পর্শকাতর যন্ত্রাপাতিতে জটিলতার কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছিল আগেই। ৫জি প্রযুক্তির ফলে সৃষ্ট জটিলতার কারণে ফ্লাইট ভিন্ন পথে পাঠানো হতে পারে বলে এফএএ সতর্ক করে দিয়েছে চলতি মাসে। ৫ জানুয়ারি ব্যাপক পরিসরে ৫ প্রযুক্তি প্রচলনের পর আরও তথ্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি।
নভেম্বর মাসেই সি-ব্যান্ড ওয়্যারলেসের বাণিজ্যিক অভিষেক পিছিয়ে দিয়েছিল এটিঅ্যান্ডটি এবং ভেরাইজন। তবে, এভিয়েশন শিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, নিরাপত্তা পদক্ষেপগুলো যথেষ্ট নয়। এয়ারপোর্ট ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে আশপাশের মোবাইল নেটওয়ার্কের ব্যপ্তি সীমিত করার পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছে বোয়িং ও এয়ারবাস।
গত সপ্তাহে ইউনাইটেড এয়ারলাইনস প্রধান স্কট কারবি বলেন, এফএএ-এর ৫জি নির্দেশনার ফলে রেডিও অ্যালটিটিউড মিটার বাধাগ্রস্থ হবে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত ৪০টি এয়ারপোর্টে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়্যারলেস শিল্প প্রতিষ্ঠান ‘সিটিআইএ’ দাবি করছে ৫জি প্রযুক্তি সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং দেশটির এভিয়েশন শিল্পের মুখপাত্ররা সত্যকে বিকৃত করে ভীতি ছড়াচ্ছেন।
নভেম্বর মাসে সিটিআইএ নির্বাহী অ্যাটওয়েল বেকার এক ব্লগ পোস্টে বলেন, “বিলম্বে বড় ক্ষতি হবে। প্রচলনের সময় আরো এক বছর পিছিয়ে দিলে পাঁচ হাজার কোটি ডলারের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাদ দিতে হবে যখন আমাদের দেশ মহামারীর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে।”