মিয়ানমারে টেলিযোগাযোগ বিষয়ক বড় বড় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন দেশি ও বিদেশি নির্বাহী কর্মকর্তাদের দেশ ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সামরিক জান্তা। দেশ ছাড়তে হলে প্রয়োজন হবে অনুমতির। বিষয়টি সম্পর্কে সরাসরি ওয়াকিবহাল এমন একজন বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ খবর জানিয়েছেন।
তিনি জানান, জুনের মাঝামাঝিতে মিয়ানমারের পোস্টস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশন্স ডিপার্টমেন্ট (পিটিডি) থেকে গোপন এক নির্দেশ দেওয়া হয়। তাতেই দেশি ও বিদেশি নির্বাহীদের দেশ ছাড়ার আগে বিশেষ অনুমতি নিতে বলা হয়েছে।
এর এক সপ্তাহ পর টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলোকে দ্বিতীয় আরেকটি চিঠি পাঠিয়ে তাদেরকে ৫ই জুলাইয়ের মধ্যে ফোনে আড়িপাতা প্রযুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা ফোনকল, মেসেজ, ওয়েব ট্রাফিক, ব্যবহারকারীদের শনাক্তকরণ ও নজরদারির জন্য এর আগেও একবার তাদেরকে এ প্রযুক্তি স্থাপন করতে বলা হয়েছিল।
জান্তা সরকার এবং বিরোধীদের কাছ থেকেও চাপের মুখে থাকা টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলো নতুন ওইসব নির্দেশের কারণে আরও চাপে পড়ল। জান্তার ‘স্পাইওয়্যার’ কিংবা নজরদারির জন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি জান্তার কোনও মুখপাত্র। নজরদারির জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে কখনওই কোনও মত জানায়নি সামরিক জান্তা।
মিয়ানমারে গত ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পরেই জান্তা সরকার নতুন সাইবার নিরাপত্তা আইন পাশের উদ্যোগ নেয়। এর আওতায় চাওয়ামাত্র সরকারকে টেলিযোগাযোগ বিষয়ক তথ্য সরবরাহ করতে হবে কোম্পানিগুলোকে।
দেশের একতা, স্থিতিশীলতা এবং শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে মনে হয়-এমন কোনও কন্টেন্ট বা ব্লকও সরিয়ে ফেলতে হবে। তাছাড়া, নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা যাতে টেলিযোগাযোগে অনায়াসে আড়ি পাততে পারেন, সেজন্য গোপনীয়তা বিষয়ক আইনও সংশোধন করেছে জান্তা।
নজরদারি প্রযুক্তি বাস্তবায়নে টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলোর ওপর সামরিক কর্মকর্তাদের উত্তেররোত্তর চাপের পর এবার কোম্পানির নির্বাহী কর্মকর্তাদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ হল।
কর্মকর্তাদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞার মূল কারণ নজরদারি প্রযুক্তি স্থাপনের কাজ শেষ করা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করার জন্য চাপ বাড়াতেই দেওয়া হয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা।